করোনার টিকাকরণ নীতি নিয়ে আগে থেকেই অভিযোগ উঠেছে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে। দেশে টিকাকরণ সঠিক পথে হচ্ছে না বলে বারবার আক্রমণ করেছেন বিরোধীরা।
এবার সেই টিকাকরণ নিয়েই সুপ্রিম কোর্টের কড়া সমালোচনার মুখে কেন্দ্রীয় সরকার। ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের কেন টাকা দিয়ে টিকা নিতে হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতিরা। বলেছেন, টিকার জন্য টাকা নেয়া অযৌক্তিক।
এই পন্থাকে অযৌক্তিক ও খামখেয়ালি বলে উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে কত ভ্যাকসিন মিলতে পারে, সেই হিসাবও দিতে বলা হয়েছে সরকারকে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে তিন বিচারপতির বেঞ্চে করোনা-সংক্রান্ত বিষয়ে স্বপ্রণোদিত মামলার শুনানি ছিল। আর সেখানে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ টিকাকরণকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে উল্লেখ করে বলে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অতিমারির চেহারা পাল্টে যাওয়ায় ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে টিকাকরণের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে।
আদালতের তরফে বলা হয়, ‘৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের বিনা মূল্যে টিকা দিয়েছে কেন্দ্র। ১৮ থেকে ৪৪-এর ক্ষেত্রে টাকা দিতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের এই নীতি অযৌক্তিক।’
সরকারের তরফে যুক্তি দেয়া হয়েছিল, সরকারের নীতির বিষয়ে বিচার বিভাগ কথা বলতে পারে না।
এ প্রসঙ্গেও কেন্দ্রকে ধমক দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় নীতির কারণে নাগরিকরা সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে আদালত চুপ করে বসে থাকবে না।
সুপ্রিম কোর্ট এও উল্লেখ করেছে, ‘১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীরা শুধু যে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন তা-ই নয়, অনেককেই দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে, মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটছে। নতুন করে হলফনামা পেশ করে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলা হয়েছে শীর্ষ আদালতের তরফে।
টিকা নিয়ে কী ভাবনা-চিন্তা করছে কেন্দ্র, তা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়েছে আদালতের তরফে।
এর আগে সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘করোনার টিকার জন্য রাজ্য সরকার বা পুরসভাকে কেন গ্লোবাল টেন্ডার ডাকতে হবে? বিচারপতিদের বেঞ্চ জানতে চায়, কেন্দ্র কি চায় যে রাজ্যগুলো ভ্যাকসিনের জন্য একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামুক?’