মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি ও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টকে রাজধানীর বাসভবন থেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে দেশটির জান্তা সরকার।
সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টির (এনএলডি) নেতাদের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গ। এ ঘটনায় দুজনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দলের নেতারা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে রাজধানীতে নিজেদের বাসভবনে আটক অবস্থায় ছিলেন এই দুই শীর্ষ নেতা।
ক্ষমতাসীন এনএলডির মাধ্যমে গঠিত ছায়া সরকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সু চিকে আবারও কোনো একটি অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে নিয়ে গেছে সামরিক সরকার।
গত ২৪ মে আদালতে তোলার আগের দিন সু চিকে তার রাজধানীর বাসস্থান থেকে সরিয়ে কোনো এক অজ্ঞাত জায়গায় এক রাত রাখা হয়েছিল।
বেসামরিক ও নির্বাচিত সরকারের নেতা অং সান সু চিকে গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির সামরিক বাহিনী।
এনএলডির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সু চির পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও ক্ষমতাসীন দলের আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতাকেও আটক করা হয়েছে।
কয়েক দিন ধরে সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে টানাপোড়েনের জেরে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান হতে পারে বলে যে শঙ্কা চলছিল, তার মধ্যেই সু চিকে গ্রেপ্তারের খবর এল।
রাজধানী নেপিদোসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে সেনা মোতায়েন করা হয়। বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ।
গত নভেম্বরে মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন নিয়েই এনএলডি ও দেশটির সামরিক বাহিনীর মধ্যে বৈরিতা চরমে পৌঁছে। নির্বাচনে এনএলডি সরকার গঠনের মতো আসন পেলেও জালিয়াতির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী।
মিয়ানমার দেশটি ২০১১ সাল পর্যন্তই সামরিক শাসনের মধ্যে ছিল। বেশির ভাগ সময়েই বন্দি অবস্থায় ছিলেন দেশটির গণতন্ত্রপন্থি নেতা সু চি।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নতুন করে নির্বাচিত সদস্যরা প্রথমবারের মতো ১ ফেব্রুয়ারি অধিবেশনের ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তা স্থগিতের আহ্বান জানিয়ে আসছিল সেনাবাহিনী।
এনএলডির মুখপাত্র মায়ো নিন্ট ফোনে বলেন, ভোরের দিকে সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও আরও কয়েকজন নেতাকে ‘ধরে নিয়ে যাওয়া’ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে বলতে চাই, তারা যেন তাড়াহুড়া করে প্রতিক্রিয়া না দেখান। আমি চাই তারা আইন অনুযায়ী কাজ করুক।’
সেনাদের বিভিন্ন অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের বাসস্থানের সামনেও টহল দিতে দেখা যাচ্ছে।