নারদা কাণ্ডে অবশেষে শর্ত সাপেক্ষে ২ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ চার নেতা-মন্ত্রীকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছে।
নারদা মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখার্জি, বিধায়ক মদন মিত্র ও সাবেক মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জামিন শুনানি শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চে শুরু হয়।
শুরুতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এখন যদি অভিযুক্তদের জামিন দিয়ে মামলার শুনানি হয় তাহলে কি কোনো সমস্যা আছে?’
সিবিআই আইনজীবী ও সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘জামিন দেবেন না। তারা মামলায় প্রভাব খাটাতে পারেন। কারণ তারা প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।’
আদালতের প্রশ্ন, ‘চার নেতা-মন্ত্রী আগেও প্রভাবশালী ছিলেন, এখন হঠাৎ প্রভাবশালী হয়ে গেলেন, এমনটা তো নয়। তাহলে এই জামিনের বিরোধিতা করছেন কেন?’
বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এতদিন যখন গ্রেপ্তার হয়নি, এখন গৃহবন্দি রাখার মানে হয় না। বিপর্যয়ের সময় মানুষের জন্য তাদের কাজ করা দরকার।’
এরপর সিবিআই আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, ‘জামিনে আপত্তি নেই। তবে কিছু শর্ত থাকবে। অভিযুক্তরা মিডিয়ার সামনে এই মামলা নিয়ে মুখ খুলতে পারবেন না। কোনো জমায়েতে যেতে পারবেন না। প্রয়োজনে কোর্টে আসতে হবে।’
কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সিবিআই আইনজীবীর জামিন শর্তের আর্জি মেনে নিয়ে অভিযুক্তদের ২ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিনের আদেশ দেয়।
১৭ মে নারদা কাণ্ডে সুব্রত মুখার্জি, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চ্যাটার্জিকে গ্রেপ্তার করে চার্জশিট দিয়ে দেয় সিবিআই। সেদিন অভিযুক্তদের ভার্চুয়ালি নিম্ন আদালতে তোলা হলে তাদের জামিন দেয়া হয়। সিবিআই এই জামিনের আদেশের বিরোধিতা করে উচ্চ আদালতে যায়। উচ্চ আদালত অভিযুক্তদের জমিনে স্থগিতাদেশ দেয়।
অভিযুক্তদের পক্ষে ওই দিনই জামিন স্থগিতের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানালে বুধবার শুনানির দিন ধার্য করা হয়। বুধবার ব্যক্তিগত কারণে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অনুপস্থিতির কারণে শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার শুনানি হয়।
এরপর ডিভিশন বেঞ্চে অভিযুক্তদের গৃহবন্দি করে রাখার রায় নিয়ে বিচারপতিদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলে কলকাতা হাইকোর্ট বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে।
কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে চার নেতা-মন্ত্রী জামিন পেলেও অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে থাকতে হবে মদন মিত্রকে।