পাকিস্তানের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা বজায় থাকলে আগামী এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের কাছে হাত পাততে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ ও বিশ্বব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা আবিদ হাসান।
সোমবার পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি এ মন্তব্য করেন।‘এইড ফ্রম বাংলাদেশ’ নামের ওই নিবন্ধে আবিদ বলেন, ‘২০ বছর আগেও চিন্তা করা যেত না যে ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের দ্বিগুণ হবে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে এটি ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক শক্তিকেন্দ্রে পরিণত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের এখনকার পরিস্থিতির পরিবর্তন না ঘটলে ২০৩০ সালের দিকেই হয়তো বাংলাদেশের কাছে আমাদের সাহায্য চাইতে হবে।’
বাংলাদেশের সফল অগ্রযাত্রাকে ভালো উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে আবিদ বলেন, ‘গত দুই দশকে প্রধান অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে পাকিস্তানকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ২০ বছরে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়েছে ৫০০ শতাংশ, যা পাকিস্তানের চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।’
তিনি লিখেছেন, ২০০০ সালে পাকিস্তানের রপ্তানির পরিমাণ বাংলাদেশের ৫০ শতাংশ বেশি ছিল। এরপর থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৭০০ শতাংশ, যা পাকিস্তানের বৃদ্ধির চেয়ে প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেশি। ২০২০ সালে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ পাকিস্তানের প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
আবিদ অভিযোগ করেন, ভুল নীতির কারণে রপ্তানিমুখী শিল্পে বিনিয়োগের বদলে অপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানিতেই বেশি টাকা খরচ করেছে পাকিস্তান।
নিবন্ধে বাংলাদেশের তুলনায় পাকিস্তানের পিছিয়ে পড়ার কিছু কারণও হাজির করেছেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক এ উপদেষ্টা। তিনি মনে করেন, পাকিস্তান রপ্তানিমুখী শিল্পের চেয়ে দেশের অভ্যন্তরে সেবা খাতে বেশি খরচ করায় অর্থনৈতিক উন্নতি বিঘ্নিত হয়েছে।
আবিদ মনে করেন, রাষ্ট্র থেকে ধর্মকে আলাদা করতে পারার কারণেও বাংলাদেশের অর্থনীতি অগ্রসর হয়েছে।
হাত পাতা এড়াতে চাইলে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণের পরামর্শ দিয়েছেন আবিদ। এ জন্য দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে বাকি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলে অর্থনীতির মৌলিক সংস্কারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন আবিদ।