ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় জরুরি চিকিৎসাসেবা দিতে সেখানে প্রবেশের আবেদন করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বিশ্ব সংস্থাটির আঞ্চলিক প্রধান আহমেদ আল মানদারি বলেন, ‘গাজায় হতাহতদের চিকিৎসায় ডব্লিউএইচওর চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের সেখানে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। চিকিৎসাবিষয়ক জরুরি সামগ্রীও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।’
সংবাদ সংস্থা বিবিসির প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে আল মানদারি অতি দ্রুত মানবিক বিবেচনায় গাজায় বোমা হামলা বন্ধে ইসরায়েলের প্রতিও আহ্বান জানান। এতে করে এই অবরুদ্ধ উপত্যকায় ঢুকতে পারবেন তারা।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইস্যুতে বিশেষ বৈঠক আহ্বান করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক পরিষদ।
সংস্থাটির দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশেষ ওই বৈঠকটি ২৭ মে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জেনেভাভিত্তিক সংস্থাটির ৪৭ সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
ইসলামিক দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সমন্বয়ক পাকিস্তান ও ফিলিস্তিনের আহ্বানে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
গাজায় প্রাণহানি অব্যাহত
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৭। এদের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ জন নারী ও ৬৪ জন শিশু।
গাজায় ১১তম দিনে গড়িয়েছে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান। দেশটির দাবি, নিহতদের মধ্যে রয়েছে দেড় শতাধিক ফিলিস্তিনি বিদ্রোহী।
অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাঞ্চলে বৃহস্পতিবার ভোরেই ১০০ দফার বেশি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজার শাসকদল হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয় বলে দাবি তেল আবিবের।
সহিংসতায় নিজ যোদ্ধাদের হতাহতের বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি হামাস। তবে পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের দিকেও রকেট ছুড়েছে ফিলিস্তিনি বিদ্রোহীরা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় চার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে গাজা থেকে।
এ কদিনের সহিংসতায় ২ শিশুসহ ১২ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।
অবরোধে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত ২০ লাখ বাসিন্দার গাজা উপত্যকা নতুন করে সহিংসতার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত কয়েক দিনে অঞ্চলটিতে বোমা মেরে অর্ধশত স্কুল-হাসপাতালসহ ১০০-এর কাছাকাছি ভবন আংশিক বা পুরোপুরি ধসিয়ে দিয়েছে ইসরায়েলি বিমান।
জ্বালানি সংকটে অঞ্চলটির মৌলিক সেবাও বন্ধের পথে।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।