গাজায় সহিংসতা নিরসনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ডাকা জরুরি বৈঠকে তৃতীয়বারের মতো উত্থাপিত যৌথ বিবৃতিটি যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় ভেস্তে গেছে।
গেল এক সপ্তাহের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে এই যৌথ বিবৃতিটি তিনবার উত্থাপিত হয়েছে। আগের দুইবারও পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর মুখে বাতিল হয়ে যায় যৌথ বিবৃতিটি।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় চালানো ইসরায়েলি হামলার নিন্দাসহ ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রস্তাব রয়েছে এই যৌথ বিবৃতিতে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘সংঘাত বন্ধে কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকরেও ওয়াশিংটন কাজ করছে।’
গাজায় হামলা বন্ধে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কোনো পরিকল্পনা না থাকার মধ্যেই নিরাপত্তা পরিষদে এমন নিষ্ক্রিয় আচরণ দেখাল যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডেন্ট জো বাইডেন এখনও ইসরায়েলি হামলার সাফাই গাইছেন।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।
এর আগে, ১২ মে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল পরিস্থিতি নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি বৈঠক হয়েছিল। তাতেও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতায় যৌথ বিবৃতির অনুমোদন ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়।
বৈঠকে উপস্থিত এক কূটনীতিক জানান, সংঘাত নিরসনে এই বিবৃতি সহায়ক হবে না বলেই মনে করে যুক্তরাষ্ট্র।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়, পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪টিই উত্তেজনা নিরসনে যৌথ বিবৃতি দেয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। তবে স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র বিবৃতির প্রস্তাব নাকচ করে দেয়।
এ ব্যাপারে জাতিসংঘের মার্কিন মিশনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত টর ওয়েনেসল্যান্ড বৈঠকে সতর্ক করে বলেন, গত সোমবার থেকেই পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে।
সোমবারই এ নিয়ে প্রথম বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। তিউনিসিয়া, নরওয়ে ও চীন প্রস্তাবটি এনেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর মুখে প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।
পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক তৎপরতায় পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে সেই উত্তেজনা ৭ মে থেকে সহিংসতায় রূপ নেয়। আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি পুলিশ হানা দিলে শুরু হয় সহিংসতা।
এরই মধ্যে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এসব সহিংসতায় দুইশতাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে এক হাজারের বেশি। এসময় হামাসের হামলায় দুই শিশুসহ ১০ ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছে।