বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গঙ্গার তীরে হাজারো বেওয়ারিশ লাশ

  •    
  • ১৬ মে, ২০২১ ১৪:০৩

গত শুক্রবার বৃষ্টির পর বালু সরে বেরিয়ে আসে অগণিত মরদেহ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে গত দুই সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু হওয়া এক হাজারের বেশি মানুষের মরদেহ পড়ে আছে বলে উল্লেখ করা হলেও বিষয়টি অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকারের মুখপাত্র নবনীত সেহগাল।

ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে (এলাহাবাদ) গঙ্গা নদীর তীরে পড়ে আছে এক হাজারের বেশি বেওয়ারিশ লাশ। বেশিরভাগ মরদেহই ভেজা বালুর নিচে চাপা দেয়া। অনেকগুলো আবার ভেসে রয়েছে নদীর কিনারে।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, মরদেহগুলো কাদের এবং এ অবস্থায় কেন পড়ে আছে, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ছোঁয়াচে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মরদেহ এভাবে ফেলে রাখা হয়েছে কি না, সে প্রশ্নে উত্তাল বিতর্ক চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

জিপ ও নৌকায় বহনযোগ্য লাউডস্পিকার ও মাইক্রোফোনের মাধ্যমে স্থানীয়দের মরদেহগুলো থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে পুলিশ। দেয়া হচ্ছে মৃত ব্যক্তিদের সৎকারে সহযোগিতার ঘোষণাও।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার বৃষ্টির পর বালু সরে বেরিয়ে আসে অগণিত মরদেহ।

উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে গঙ্গার তীরে দুই সপ্তাহে সন্ধান মিলেছে এমন এক হাজারের বেশি মরদেহের। ছবি: এপি

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে গত দুই সপ্তাহে করোনায় মৃত্যু হওয়া এক হাজারের বেশি মানুষের মরদেহ পড়ে আছে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে রাজ্য সরকারের মুখপাত্র নবনীত সেহগাল।

‘অল্প কিছু মরদেহ’ পড়ে আছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সঙ্গে এসব মরদেহের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে আমি নিশ্চিত। হিন্দু রীতি অনুযায়ী অনেক গ্রামবাসী মৃত স্বজনদের দাহ না করে নদীতে মরদেহ ভাসিয়ে দেন বা নদীর তীরে মাটিচাপা দেন। এসব মরদেহও তেমনই মানুষজনের।’

অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা কে পি সিং জানান, প্রয়াগরাজে গঙ্গা নদীর তীরে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের বিপুলসংখ্যক মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে। নতুন করে সেখানে কোনো মৃতদেহ মাটিচাপা দেয়ার অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ।

এলাহাবাদে গঙ্গার তীরে করোনায় মৃত স্বজনের মরদেহ শেষকৃত্যের জন্য নিচ্ছেন স্বজনরা। ছবি: এএফপি

মরদেহ সৎকারে সহযোগিতা করা জনহিতকর প্রতিষ্ঠান বন্ধু মহল সমিতির সদস্য রমেশ কুমার সিং জানান, গ্রামাঞ্চলে এমন মরদেহের সংখ্যা অনেক বেশি। শেষকৃত্যে প্রচুর খরচ আর চিতায় পোড়ানোর জন্য কাঠের ঘাটতি থাকায় গরিব মানুষরা চাইলেও স্বজনদের মরদেহ পোড়াতে পারছেন না।

করোনাভাইরাস মহামারির এ পর্যায়ে ভারতে প্রতিদিন গড়ে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বিপুল মৃত্যুতে শ্মশান ও কবরস্থানগুলোতে চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সৎকারের অপেক্ষায় থাকে শত শত মরদেহ।

এমন পরিস্থিতিতে সৎকারের খরচ তিন গুণ বেড়ে ১৫ হাজার রুপি ছাড়িয়েছে অনেক জায়গায়।

হিন্দু ধর্মে পবিত্র বিবেচিত গঙ্গার বিভিন্ন উপকূলে মাছ ধরার জাল দিয়ে মানুষের ভেসে ওঠা লাশ তীরে টেনে আনছেন স্থানীয়রা।

গত সপ্তাহে বিহারে গঙ্গার তীরে ভেসে ওঠা ৭১ জনের মরদেহ উদ্ধার করে স্বাস্থ্য প্রশাসন। ময়নাতদন্ত করা হলেও মরদেহগুলোতে পচন ধরে যাওয়ায় তাদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন সম্ভব হয়নি।

একই সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলায় নদীর তীরে দুটি এলাকায় বালুর নিচে চাপা দেয়া ১২টির বেশি মরদেহের সন্ধান মেলে।

ভারতের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দুই প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশ ও বিহারে প্রায় ৩৬ কোটি মানুষের বাস। মহামারিতে বিপর্যস্ত রাজ্যগুলোর অন্যতমও এই দুই রাজ্য।

দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত স্বজনদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য গ্রাম থেকে শহরে ছুটছেন হাজারো মানুষ। পথেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের।

এ বিভাগের আরো খবর