ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলমান সহিংসতা দমনে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের স্পেশাল বেঞ্চ ।
বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক সহিংসতায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনজীবী অনিন্দ্য সুন্দর দাসের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে সোমবার এই মন্তব্য করে বিচারপতিদের স্পেশাল বেঞ্চ।
জনস্বার্থ মামলায় সাধারণ মানুষের জীবন এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করা হয়। এই মামলার পরবর্তী শুনানি মঙ্গলবার।
এদিকে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেন, কমিশনের হাতে তিন মাস ধরে প্রশাসনের অবনতি হয়েছে। তবে দায়িত্ব নিয়েই তিনি কড়া হাতে যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের এসপি, ডিএমদের ।
এদিকে রাজ্যে তাদের কর্মীদের ওপর তৃণমূলের হামলার অভিযোগে বিধানসভায় তাদের সব ধরনের অংশগ্রহণ বয়কট করেছে বিজেপি ।
কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যে এসেছে। তাদের কর্মী ‘খুনের’ ঘটনায় জোরালো সরব হয়েছেন।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তৃতীয়বারের জন্য শপথ নেয়ার পরপরই তাকে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার কথা মনে করিয়ে দেন। এ নিয়ে তৃণমূলের সৌগত রায় বলেন, ‘উনি এসব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করছেন। অমিত শাহের কৌশল এখানে খাটবে না।’
মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘বিজেপি মানুষের রায় মেনে নিতে পারছে না। তার প্রশ্ন, ‘কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে যাচ্ছে কেন? আর কি কোনো দলের কর্মী আক্রান্ত হয়নি? অন্য দলে আক্রান্ত কর্মীদের বাড়িতে যাচ্ছে না কেন?’
এই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতিদের স্পেশাল বেঞ্চের এই মন্তব্য রাজ্য সরকারকে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেবে, তাতে সন্দেহ নেই।
তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘যখন রাজ্যের তৃণমূল কর্মীদের সন্ত্রাস চলছে, তখন আদালতের এই মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।’
অন্যদিকে বিজেপির সংসদীয় দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘রাজ্যজুড়ে নরসংহার চলছে। আদিবাসীদের বাড়িঘর লুটপাট, ভাঙচুর করা হচ্ছে। রাজ্যের শান্তিপূর্ণ বহুদলীয় গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করতে লড়াই করবে বিজেপি।’
নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘৯৯ শতাংশ ফেক সংঘর্ষের, ভিডিও দেখাচ্ছে বিজেপি।’