সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুলাজিজ আল সৌদের সম্মানে একটি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তান। মসজিদটি নির্মিত হবে রাজধানী ইসলামাবাদে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তিন দিনের সফরে সৌদি আরবে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই এ ঘোষণা আসে। এ নিয়ে সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে আরব নিউজ।
ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে পরিকল্পিত মসজিদটিতে ৪ হাজার পুরুষ এবং ২ হাজার নারীর একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
মসজিদ প্রকল্পের আওতায় থাকবে একটি জাদুগর ও একটি লাইব্রেরি। এগুলোও করা হবে বাদশা সালমানের নামে। আর যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমানের নামে করা হবে কনফারেন্স হল। এ ছাড়া, মসজিদ এলাকায় থাকবে একটি প্রশাসনিক ভবন, গাড়ি পার্কিং এবং সামনে উন্মুক্ত বিশাল জায়গা।
সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের আমন্ত্রণে তিন দিনের সফরে শুক্রবার রাতে সৌদি আরবে পৌছাঁন ইমরান খান। তার সফর সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি, পাকিস্তানের সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শেখ রাশিদ আহমেদ ও সিনেটর ফয়সাল জাভেদসহ আরও অনেকে।
জেদ্দা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ইমরানকে উষ্ণ অভিবাদন জানান ক্রাউন প্রিন্স বিন সালমান।
এই সফরে দুই দেশের মধ্যে অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, সৌদি আরবে পাকিস্তানিদের কর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। আলোচনা হবে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও।
সফরের অংশ হিসেবে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মহাসচিব ড. ইউসেফ আল-ওথাইমিন, ওয়ার্ল্ড মুসলিম লিগের মহাসচিব মোহাম্মদ বিন আব্দুলকরিম আল-ইসা এবং পবিত্র মক্কা ও মদিনার দুই ইমামের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর।
সৌদি আরবে ২০ লাখের বেশি পাকিস্তানির বসবাস। তাদের সঙ্গে জেদ্দায় এক অনুষ্ঠানে মিলিত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইমরান খানের।
সৌদি আরব ও পাকিস্তানের কূটনীতিক সম্পর্ক অনেক পূরাতন হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়। পাকিস্তানকে এড়িয়ে অনেকটা ভারতঘেঁষা হয়ে পড়ছিল মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্কও ফের উষ্ণতার দিকে মোড় নেয়। মান অভিমান ভেঙে গত মার্চে ইমরান খানকে ফোন করেন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
ওই সময় করোনায় আক্রান্ত ইমরানের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন বিন সালমান। পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীও সৌদি যুবরাজের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে সবুজায়নের লক্ষ্যে ‘সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’ ও ‘গ্রিন মিডল ইস্ট ইনিশিয়েটিভ’ উদ্যোগের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বিন সালমানকে চিঠি লেখেন পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী। চিঠিতে বিন সালমানকে ‘ভাই’ সম্বোধন করেন ইমরান খান।
আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বৈশ্বিক ইস্যুতে পাকিস্তান-সৌদির আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক মুসলিম বিশ্বের জন্যও গুরুত্ব বহন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। সৌদি আরব ওআইসির জম্মু ও কাশ্মীর গ্রুপের সদস্যও।