মেরুদণ্ড ও স্নায়ুতন্ত্রের জটিল সমস্যা স্পাইনাল মাস্কিউলার অ্যাট্রফিতে আক্রান্ত ভারতের গুজরাটের আহমেদাবাদের শিশু ধৈর্য্যরাজসিং রাঠোড়। এটি একধরনের জেনেটিক রোগ, যাতে আক্রান্ত হলে স্পাইনাল কর্ড বা সুষুম্না কাণ্ড ও মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত স্নায়ুকোষ তৈরি ব্যাহত হয়। এর ফলে দেহের পেশি ও বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনে অক্ষম হয়ে পড়ে আক্রান্ত ব্যক্তি।
জটিল এ রোগ থেকে বাঁচতে পাঁচ মাস বয়সী শিশুটির দরকার ছিল এককালীন জিন থেরাপি জোলজেন্সমা। এর অংশ হিসেবে তার শরীরে ১৬ কোটি রুপি মূল্যের একটি ইনজেকশন প্রয়োগের কথা বলেছিলেন চিকিৎসক। কিন্তু ধৈর্য্যরাজসিংয়ের দরিদ্র বাবার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা অসম্ভব ছিল।
বিষয়টি জানাজানি হলে সাহায্যের হাত বাড়ান ভারতের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের দেয়া অনুদানেই কেনা সম্ভব হয় ব্যয়বহুল ইনজেকশনটি।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য মুম্বাইয়ে আনা হয়েছে। তার ইনজেকশনের অর্থ জুগিয়েছে আড়াই লাখের বেশি মানুষ।
সন্তানের জন্মের কিছুদিন পর অসুখের খবরে ভেঙে পড়েন ধৈর্য্যরাজের বাবা। চিকিৎসকরা তাকে বলেছিলেন, দ্রুত চিকিৎসা করানো না গেলে দুই বছরও বাঁচবে না শিশুটি।
ধৈর্য্যের বাবা বলেন, ‘আমার সব সম্পত্তি বেঁচে দিয়ে বা সঞ্চয় ভেঙে ফেলেও এত টাকা জোগাড় করতে পারতাম না।’
মুম্বাইয়ের পিডি হিন্দুজা হাসপাতালের শিশুদের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. নীলু দেশাই জানান, প্রতি ৮ থেকে ১০ হাজার শিশুর মধ্যে একজন বিরল এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে শিশুর বেশি দিন বাঁচার সম্ভাবনাও থাকে না।
এমন অবস্থায় ধৈর্য্যকে বাঁচানোর আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন তার বাবা।
তিনি জানান, অপরিচিত একটি শিশুকে বাঁচাতে ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের ছোট ছোট অনুদানে যে এই বিপুল অঙ্কের টাকা উঠে আসতে পারে, তা কল্পনাও করেননি তিনি।
ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম ইমপ্যাক্টগুরুর সহযোগিতায় এ অসাধ্যসাধন সম্ভব হয়েছে মাত্র ৪২ দিনে।
ছোট্ট ধৈর্য্যকে ইনজেকশনটি দেয়া হয়েছে বুধবার। এটি নেয়ার ফলে ভেন্টিলেটর ছাড়াই শ্বাস নিতে পারবে শিশুটি। নিজে নিজে বসা, হামাগুড়ি দেয়া আর হাঁটায় শিশুকে সাহায্য করবে ওষুধটি।