তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না বলে দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন কেউ কেউ। তাদের নাকি দম বন্ধ হয়ে আসছিল। অন্যদিকে কাজ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা, এই নেতাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছিল বিজেপি।
ভোটের মুখে এভাবে তৃণমূল দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়া এই নেতাদের বেশির ভাগকেই ফিরিয়ে দিলেন ভোটাররা। তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির হাত ধরার এই নেতাদের বেশির ভাগই হেরেছেন ভোটে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝাঁকে ঝাঁকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়া পরাজিত প্রার্থীদের মধ্যে আছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, তিনি দলে থেকে উন্নয়নের কাজ করতে পারছিলেন না। শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। উন্নয়নের গতি বজায় রাখতেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
ডোমজুড় কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে ভোটে লড়েছিলেন তিনি।
‘কাজ করার জন্য উদগ্রীব’ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষও তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভবানীপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হেরে গেছেন।
ইন্দ্রনীল বলেন, ‘হেরে গেলেও পিছু হটার প্রশ্ন নেই। অভিনয় আর রাজনীতি আগেই দুটো একসঙ্গে করেছি। মানুষ আমাকে পাশে পাবেন।’
বিজপুর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায় বাবা মুকুল রায়কে অনুসরণ করে ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনিও হেরে গেছেন।
এলাকায় বিজেপির সংগঠন নেই। দল বদল করে তিনিও মানুষকে বিজেপিমুখী করতে পারেননি এলাকায়।
শীলভদ্র দত্ত মুকুল রায় অনুগামী হিসেবে পরিচিত। খড়দা কেন্দ্রে তিনিও পরাজিত হয়েছেন।
বৈশালী ডালমিয়া বালি কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। তিনি তৃণমূলের বিধায়ক ছিলেন। দল পাল্টানোর সময় তিনিও দেন অজুহাত ‘দলে থেকে কাজ করতে পারছিলেন না’।
সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তৃণমূলে যথেষ্ট সম্মান পাচ্ছিলেন না জানিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে ভোটাররা তাকে সম্মান জানালেন না।
দল বদলের পর পাণ্ডবেশ্বর কেন্দ্রে পরাজিত জিতেন্দ্র তিওয়ারির অভিযোগ ছিল, তৃণমূলে থেকে উন্নয়নের কাজে দলের সহযোগিতা পাচ্ছিলেন না।
বিধাননগর কেন্দ্রে সব্যসাচী দত্ত একাধিক ইস্যুতে তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করে বাংলার উন্নয়নের লক্ষ্যের কথা বলে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে।
তবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে হারিয়ে চমক দেখিয়েছেন তার সাবেক সহযোগী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বিজেপির হয়ে লড়বেন- এই বিষয়টিই সে সময় তোলপাড় তুলেছিল।