অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) প্রথম হেলিকপ্টার মঙ্গল গ্রহের আকাশে উড়েছে। ছোট্ট এই ড্রোনের নাম ইনজেনুইটি।
সোমবার এক মিনিটেরও কম সময় আকাশ ভেসেছে ইনজেনুইটি। তবে পৃথিবী থেকে নিয়ন্ত্রিত একটি যান ভিনগ্রহের আকাশে এভাবে ভেসে থাকাকে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে নাসা।
বিবিসি জানায়, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইনজেনুইটির উড্ডয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এমন রোমাঞ্চকর ভাসান-উড়ানের খেলা আরও চলবে বলে জানিয়েছে নাসা।
ইনজেনুইটি। ছবি: নাসা
ইনজেনুইটি সোমবার ইস্টার্ন টাইম জোন (ইডিটি) অনুযায়ী ভোর সাড়ে তিনটায় উড়তে শুরু করে।
ঐতিহাসিক এই উড়ালের ঘটনা গত ১১ এপ্রিল হওয়ার কথা ছিল। তবে ৯ এপ্রিল প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা শুরুর পর কিছুটা দেরি হয়ে যায়। ইনজেনুইটি বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় সফল হয়েছে।
নাসার পারসিভারেন্স রোভার পেটে ইনজেনুইটিকে নিয়ে লাল গ্রহের জেজেরো ক্রেটার স্পর্শ করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। ইনজেনুইটি আকারে বেশ ছোটই বলা হয়। এর উচ্চতা ১৯ ইঞ্চি, ওজন ১ দশমিক ৮ কেজি।
ক্যালিফোর্নিয়ার পাসাডোনায় অবস্থিত নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) ইনজেনুইটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক মিমি অং বলেন, ‘আমরা এখন বলতে পারি, মানুষ ভিনগ্রহেও হেলিকপ্টার উড়িয়েছে।‘
১৯০৩ সালে প্রথম বিমানের সফল উড়ান সম্পন্ন করা রাইট ভাইদের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা রাইট ব্রাদার্স মুহূর্তের কথা প্রায়ই বলি, মঙ্গল গ্রহ বিবেচনায় এটাই হচ্ছে আমাদের সেই সময়।‘
নাসার ইলাস্ট্রেশনে উড়ছে ইনজেনুইটি। ছবি: নাসা
যদিও ইনজেনুইটি বাতাসে ভেসে ছিল মাত্র ৪০ সেকেন্ড। তিন মিটার উপরে উঠে একটা ঘুরান দিয়েই অবতরণ করে এটি।
লাল গ্রহে এই উড়ানও অবশ্য সহজ নয়। সেখানকার বাতাস পৃথিবীর তুলনায় অনেকটাই পাতলা। বাতাসের ঘনত্ব পৃথিবীর তুলনায় মাত্র এক শতাংশ।
ইনজেনুইটির গায়ে এরিয়াল ছবি নেয়ার জন্য একটি ক্যামেরা আছে। সোলারের মাধ্যমে এতে শক্তি সঞ্চয় করা হয়।
পরবর্তীতে পারসিভারেন্স রোভার মঙ্গলগ্রহে প্রাচীন জীবনের অস্তিত্ব খুঁজবে এবং ভবিষ্যৎ উদ্ধার কাজের জন্য নমুনা সংগ্রহ করবে।