করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আগামী তিন সপ্তাহ ভারতের জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের শীর্ষ গবেষণা সংস্থা কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের (সিএসআইআর) পরিচালক ড. রাকেশ মিশরা।
সোমবার ইন্ডিয়া টিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ড. মিশরার বরাত দিয়ে জানান হয়, ‘আগামী তিন সপ্তাহ করোনার সংক্রমণ রোধে ভারতের জনগণকে আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।
দেশজুড়ে হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন সিলিন্ডার ও টিকার তীব্র সংকটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ড. মিশরা বলেন, ‘যদি জনসাধারণের মধ্যে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার প্রবণতা দেখা না যায় তবে গোটা দেশ এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাবে।
‘আমরা করুন ও অসহায় অবস্থায় দেখেছি ইতালিকে। চিকিৎসা সামগ্রী ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবে অনেক রোগীকে হাসপাতালের বারান্দায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়েছে। আমরা এখন করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবলে পড়তে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের নতুন ধরনগুলো আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে দ্রুত সংক্রমিত করছে মানুষকে। আরও একাধিক নতুন ধরন খুব শিগগিরই প্রকাশ পেতে পারে। জনগণ যদি এখনই কোভিড বিষয়ক স্বাস্থ্যবিধি ও নির্দেশিকা মেনে না চলে তবে অনেক মানুষ ভাইরাসের নতুন ধরনগুলোতে আক্রান্ত হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে কারণ সাধারণ মানুষ মাস্ক পরতে চাইছে না। তারা মনে করছেন মহামারি শেষ হয়ে গেছে।’
চলমান কুম্ভ মেলা ও অন্যান্য ধর্মীয় সমাবেশ এবং রাজনৈতিক সমাবেশের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘কুম্ভ মেলা ও রাজনৈতিক সমাবেশের মতো এ ধরনের বড় জমায়েতগুলো বহু মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার অন্যতম বড় কারণ হয়ে উঠতে পারে। এমন সব জমায়েত থেকে মানুষ তাদের নিজ নিজ শহর, গ্রাম ও বাড়িতে ফিরে গিয়ে নিজের অজান্তে ছড়িয়ে দিবে এই ভাইরাস।’
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে টানা পঞ্চম দিন রেকর্ড করেছে প্রতিবেশি দেশ ভারত। সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির আড়াই লাখেরও বেশি মানুষের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।
ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। ওই সময় ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয় ১ হাজার ৬১৯ জনের।
সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ভারতে করোনায় শনাক্তের সংখ্যা দেড় কোটিতে ঠেকল। এখন পর্যন্ত এতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার জনের।