ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার পঞ্চম দফার নির্বাচনে ছয়টি জেলার ৪৫টি আসনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
আজকের ভোটে ভাগ্য নির্ধারণে উল্লেখযোগ্য তারকা প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য, রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গৌতম দেব, ব্রাত্য বসু, অদিতি মুন্সি, বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য ও পার্ণো মিত্র।
পঞ্চম দফা ভোটে ৪৫টি আসনের মধ্যে ১৬টি উত্তর চব্বিশ পরগনার, নদীয়া ও পূর্ব বর্ধমানে ৮টি করে আসন, ৭টি আসন জলপাইগুড়ি এবং ১টি আসন কালিম্পং জেলার।
চতুর্থ দফার ভোটে সহিংসতার ঘটনা মাথায় রেখে নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে চারজন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আর একজন উত্তেজিত জনতার হাতে মারা যান।
এবারের ভোটে সহিংসতা এড়াতে ৮৫৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করেছে কমিশন।
পঞ্চম দফার ভোটে মোট ৩১৯ প্রার্থীর ৩৯ জন নারী প্রার্থী।
আজকের ভোটে ৪৫টি আসনেই তৃণমূল ও বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে সিপিএম ১৯টি, কংগ্রেস ৭টি, আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএস ৩টি, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, আরএসপি, মার্কসিস্ট ফরওয়ার্ড ব্লক ১টি করে আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। সংযুক্ত মোর্চা ১২টি আসনে প্রার্থী দেয়নি।
কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্রে এবারের তৃণমূলের প্রার্থী মদন মিত্র সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত। এর জন্য তিনি এক বছর জেলও খেটেছেন। এ ছাড়া চিটফান্ড কেলেঙ্কারির বিচার চলছে।
উত্তর চব্বিশ পরগনার বরানগর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী পার্ণো মিত্র। তার প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী তাপস রায়। রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রে এবার তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সংগীতশিল্পী অদিতি মুন্সি। এ কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপির শমিক ভট্টাচার্য।
কঠিন লড়াইয়ে সবুজ ও গেরুয়া মুখোমুখি দুই শিবির।
গতকালের নির্বাচন কমিশনের সর্বদল বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, করোনাবিধি মেনেই সম্পন্ন হবে ভোটের পর্ব। কমিশন ভোট প্রচারের সময় কমিয়ে দিয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত নির্বাচনি প্রচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী তিন দফার ভোটে ৪৮ নয়, ৭২ ঘণ্টা আগে প্রচার বন্ধ রাখতে হবে বলে কমিশন নির্দেশ দিয়েছে ।
সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিধি মেনেই জনসভা করা যাবে। তবে ভোটের পূর্বনির্ধারিত নির্ঘণ্ট বদলাচ্ছে না।’
বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘কোভিড-বিধি মেনেই প্রচার চলবে। এখন ভার্চুয়াল সভা করা সম্ভব নয়।’
তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘করোনা সংক্রমণে মানুষের জীবনের প্রশ্নে বাকি ভোটের দফা কমিয়ে আনার জন্য কমিশনকে বলেছি।’
কিন্তু নির্বাচন কমিশন তা সম্ভব নয় বলে আগেই জানিয়েছে। বিজেপি অবশ্য আট দফা ভোটই চায়।
এদিকে সংযুক্ত মোর্চার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেবল তারাই কোভিড-বিধি মেনে প্রচার করছে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলো কোভিড-বিধি মানছে না।
শীতলকুচি সহিংসতার ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী।
সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ। ভোট গ্রহণ চলছে শান্তিপূর্ণভাবে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।