সামাজিক দূরত্বের করোনা বিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সোমবার হরিদ্বারের গঙ্গায় শাহী স্নান সারলেন ২১ লক্ষ পুণ্যার্থী।
প্রতি ১২ বছর অন্তর উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে এই কুম্ভমেলা হয়। এবার করোনা মহামারির আবহে এই মেলায় সংক্রমণ ঝুঁকি রোধে রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
কিন্তু মেলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আইএএস অফিসার দীপক রাওয়াত স্বীকার করেছেন, এ ধরনের একটি বিশাল ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা খুবই বড় চ্যালেঞ্জ।
মেলার দিন ভোর থেকেই লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গায় শাহী স্নান সারতে থাকেন। ছয়টা বাজতে না বাজতেই প্রায় ৬ লাখ মানুষ স্নান সেরে ফেলেন। এদের প্রায় কারও মুখে মাস্ক ছিল না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলে এগিয়ে যান হরিদ্বারের হর কি পৌরি ঘাটে। সেখানেই পুণ্যলগ্নে সারলেন স্নান।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আখড়ার সাধু–সন্তরাও।
সামাজিক দূরত্ববিধি?- এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কুম্ভের আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা ইনস্পেক্টর জেনারেল সঞ্জয় গাঞ্জিয়াল বলেন, ‘এত লাখ লাখ মানুষ ঘাটে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ববিধি মানতে বললে দুর্ঘটনা হতো। পদপিষ্ঠ হয়ে হতাহত হতে পারত। তাই আর বলা হয়নি।’
সোমবার সকালে পাওয়া সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯১২ জন।
আর মাস্ক?
পুলিশকর্তা নিজেই জানিয়ে দিলেন, এই নিয়ে খুব বেশি আর কড়াকড়ি করেননি তারা।
মোট ১৩টি আখড়ার সাধুরা এদিন শাহী স্নানে অংশ নেন। আখড়ার জন্য নির্দিষ্ট ঘাট বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে সাধারণ পুণ্যার্থীদের প্রবেশ নিষেধ। এক–একটি ঘাটের জন্য এক এক সময় নির্দিষ্ট ছিল।
ভোরবেলা হর কি পৌরি ঘাটে প্রথম স্নান করেছেন নিরঞ্জনী আখড়ার সাধুরা। বিকেল পাঁচটার সময় সংরক্ষিত নির্মল আখড়ার জন্য।
সোমবারের পর ১৫ এবং ২৭ এপ্রিলও শাহী স্নানের যোগ রয়েছে। ওই দিনগুলোতেও এ রকমই ভিড় হতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বাকি অঞ্চলের মতো উত্তরাখণ্ডেও করোনা সংক্রমণ লাগামছাড়াভাবে বেড়েছে। দেরাদুন আর হরিদ্বারে সংক্রমণ সবথেকে বেশি।
রোববার হরিদ্বারে নতুন করে আক্রান্ত ৩৮৬ জন। তার পরেও কীভাবে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এই জমায়েতের? প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।