করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (এআইআইএমএস) বৃহস্পতিবার তিনি টিকা নেন বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী সক্ষম সবাইকে টিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পয়লা মার্চ ষাটোর্ধ্ব এবং করোনা বাদে অন্য রোগ থাকা ৪৫ বছরের বেশি বয়সীদের টিকাদান শুরু করে ভারত। ওই দিন টিকা নিয়েছিলেন মোদি।
দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর একটি ছবি টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে জেতার অল্প কয়েকটি পন্থার একটি হলো টিকা নেয়া।
এবার টিকা নেয়ার সময় মোদির মুখে ছিল মাস্ক।
‘এআইআইএমএসে আজ (বৃহস্পতিবার) কোভিড-১৯-এর টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিলাম। ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অল্প কয়েকটি পন্থার একটি হলো টিকা নেয়া। টিকা নিতে সক্ষম হলে দ্রুত নিয়ে নিন’, টুইটে লেখেন মোদি।
Got my second dose of the COVID-19 vaccine at AIIMS today.Vaccination is among the few ways we have, to defeat the virus.If you are eligible for the vaccine, get your shot soon. Register on https://t.co/hXdLpmaYSP. pic.twitter.com/XZzv6ULdan
— Narendra Modi (@narendramodi) April 8, 2021ওই টুইটের সঙ্গে ভারতে টিকা নিতে ইচ্ছুকদের নিবন্ধনের ওয়েবসাইট কোউইনের একটি লিংক সংযুক্ত করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) উৎপাদিত টিকা কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন মোদি।
প্রধানমন্ত্রীকে টিকাদানে নিয়োজিত ছিলেন দুইজন নার্স। প্রথম ডোজটি দিয়েছিলেন পি নিবেদা। দ্বিতীয় ডোজ দেন নিশা শর্মা।
ছবিতে দেখা যায়, দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার সময় মোদির বাহু ধরে আছেন নিবেদা।
ভারতে ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচিতে পুনেভিত্তিক সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন দেয়া হচ্ছে।
সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে টিকার আওতা বাড়াচ্ছে ভারত। দেশটি শুরুতে সম্মুখসারির কর্মী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেয়। পরবর্তী সময়ে ষাটোর্ধ্ব ও ৪৫ বছর বয়সীদের জন্য টিকা নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়।
এখন পর্যন্ত দেশটিতে টিকা নিয়েছেন ৯ কোটির বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসে ভারতে এখন সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ৯ লাখ ৫ হাজার ২১। গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৫৯ হাজার ৯০৭ জন। মোট আক্রান্তের নিরিখে এরপরই রয়েছে কেরালা, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো দক্ষিণের রাজ্যগুলো।
গত ২৪ ঘণ্টায় ছত্তিশগড়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছে ১০ হাজার ৩১০ জন। কর্ণাটকে করোনা আক্রান্ত ৬ হাজার ৯৭৬ জন। উত্তরপ্রদেশে করোনা আক্রান্ত ৬ হাজার ২৩ জন।
দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত ৫ হাজার ৫০৬ জন। মধ্যপ্রদেশে আক্রান্ত ৪ হাজার ৪৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩৯০ জন। ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি এবার কর্মক্ষেত্রে টিকা দেওয়া হবে। আগামী ১১ এপ্রিল থেকে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে শুরু হবে এ কর্মসূচি। সে জন্য এরই মধ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোকে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষ থেকে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, ‘রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর সাহায্যে এই টিকাকরণ কর্মসূচির সুফল যাতে আরও মানুষ পান, তারই প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে কর্মক্ষেত্রে অনেকে যাতায়াত করেন। সেখানে সংক্রমণ বাড়তে পারে।
‘তাই যেসব অফিসে টিকা নিতে ইচ্ছুক এবং টিকা নেওয়ার যোগ্য ১০০ জন কর্মী পাওয়া যাবে, তাদের কর্মক্ষেত্রে টিকা দেওয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি দুই ধরনের অফিসের জন্যই এই নির্দেশিকা।’