দুই বছর আলোচনা বন্ধ থাকার পর অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠক বসছে ভারত-পাকিস্তান।
পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে গঠিত সিন্ধু কমিশন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বৈঠকটির আয়োজন করেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) ও অন্যান্য বিষয়ে ভারত-পাকিস্তানের দেয়া বিরল যৌথ বিবৃতির এক মাস পরই এমন আলোচনায় বসছে দুই দেশ।
সিন্ধু কমিশনের শর্ত অনুযায়ী, ভারত ও পাকিস্তানকে প্রতিবছর একবার করে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসতে হবে। সবশেষ ২০১৮ সালের আগস্টে যৌথ বৈঠক হয়। ২০২৯ সালে পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় ভারতের ৪০ জন সেনা নিহত হলে বার্ষিক বৈঠক বাতিল হয়ে যায়।
গত বছর করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়লে ভারত ভার্চুয়াল বৈঠক চাইছিল। কিন্তু পাকিস্তানের চাওয়া ছিল, বৈঠকটি হোক সরাসরি আটারি-ওয়াগাহ সীমান্তে। কিন্তু দুই দেশ মতৈক্যে পৌঁছাতে না পারায় সে বৈঠকটিও বাতিল হয়।
পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলা ও পাকিস্তানে ভারতের বিমান হামলার ঘটনায় প্রতিবেশী দেশ দুটির সম্পর্কে বরফ জমে। সিন্ধু নদী কমিশনের এই বৈঠককে সে বরফ গলার উপলক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর সিন্ধু কমিশনের এটাই প্রথম সভা। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজ্যকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ নামে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়।
পাকিস্তান জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের কড়া প্রতিবাদ জানায়। নয়াদিল্লি সিদ্ধান্তকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে পাকিস্তানকে নাক না গলানোর আহ্বান জানায়।
সিন্ধু কমিশনের সভায় মঙ্গলবার লাদাখে ভারতের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ আরও অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ। এরই মধ্যে পাকিস্তানে প্রকল্পটির বিরোধিতা শুরু হয়েছে। সভাতেও তার প্রতিফলন দেখা যেতে পারে।
ভারতের প্রতিনিধিদলে থাকছেন পিকে সাক্সেনা। তিনি কেন্দ্রীয় পানি কমিশন, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থা ও জাতীয় জলবিদ্যুৎ শক্তি করপোরেশনের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।
কমিশনের বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে থাকছেন সৈয়দ মোহাম্মাদ মেহের আলী শাহ।
নয়াদিল্লির প্রতিনিধি সাক্সেনা বলেন, ‘আমরা সব সময়ই চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্য অধিকার প্রয়োগে বদ্ধপরিকর; আলোচনার মাধ্যমে অন্য ইস্যুগুলোর সমাধানও প্রত্যাশা করছি।’
পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে কিছুদিন ধরেই। গত ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের সেনাপ্রধানের মধ্যে টেলিফোনে কথা হয় নিয়ন্ত্রণরেখাসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে। সেখানে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে শান্তি বজায় রেখে একসঙ্গে সামনে এগোনোর কথা বলা হয়।