সরকারি কোনো মতের বিরোধিতা করলেই সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয় বলে মন্তব্য করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে করা এক মামলা খারিজ করে দিয়ে এ মন্তব্য করে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল এবং হেমন্ত গুপ্ত বলেছেন, ‘সরকারি মতের বিরুদ্ধাচরণ করলেই সেটা দেশদ্রোহিতা নয়।’
কেন্দ্র ২০১৯-এর আগস্টে জম্মু-কাশ্মীর থেকে বিলোপ করেছে সংবিধানের বিশেষ ৩৭০ ধারা। সেই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে সরব হয়েছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ফারুক আবদুল্লা। তার সেই সরব হওয়ার মধ্যে ‘দেশদ্রোহিতা’র ইঙ্গিত পেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন জনৈক রজত শর্মা। সেই মামলার শুনানিতে বুধবার এই মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
‘বিশ্ব গুরু ইন্ডিয়া ভিশন অব সর্দার প্যাটেল’ সংস্থার সচিব ও ট্রাস্টি রজত শর্মা ও নেহা শ্রীবাস্তব নামে আরেক ব্যক্তি জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সম্পর্কিত সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করার সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে আবদুল্লাহর মন্তব্যকে দেশবিরোধী বলে চিহ্নিত করেছিলেন।
সম্প্রতি টুলকিট কাণ্ডে গ্রেপ্তার দিশা রবির জামিন মামলায় একই কথা বলেছে দিল্লির এক আদালত। দেশদ্রোহিতাসহ একাধিক মামলায় দিশা রবিকে গ্রেপ্তার করেছিল দিল্লি পুলিশ। সেই মামলায় এই তরুণী পরিবেশকর্মীকে জামিন দিয়ে আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা উল্লেখ করেন যে দিশা রবির ‘কোনো অপরাধমূলক উদ্দেশ্য ছিল না’।
দিশা রবিকে ১ লাখ টাকা মূল্যের ২টি বন্ডের বদলে জামিন দেয়া হয়।
তখন দিল্লির আদালত বলেছিল, নাগরিকরা যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে সরকারের বিবেকের রক্ষাকারী। তারা সরকারের নীতিগুলির সঙ্গে একমত না হলে তাদের জেলে ঢোকানো যেতে পারে না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সকলের রয়েছে।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট থেকে গৃহবন্দি ছিলেন ফারুক আবদুল্লাসহ কাশ্মীরের অন্য রাজনৈতিক কর্মীরা। ফারুক আবদুল্লার ছেলে ওমর আবদুল্লা এবং অপর এক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকেও গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মুক্তি দেয়া হয়েছে ফারুক আবদুল্লাকে। তার আগে গত বছরের শুরুতে মুক্তি পান ওমর আবদুল্লা।