সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে।
বুধবার এক বিবৃতিতে ফেসবুক জানিয়েছে, ‘১ ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর ঘটতে থাকা প্রাণঘাতী সহিংসতার কারণে এই এই নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন হয়েছে। আমরা মনে করি, তাৎমাদাওকে (মিয়ানমারের সেনাবাহিনী) ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম চালানোর সুযোগ দেয়াটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’
এর আগে রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) ফেসবুকের নীতিমালা লঙ্ঘণ করার অভিযোগে দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান পেজ বন্ধ করে দিয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে না বলেও জানিয়েছে ফেসবুক।
ফেসবুকের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকালের জন্য জারি থাকবে।
নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছিল সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে তারা ফেসবুকে এ সংক্রান্ত প্রচারও চালাচ্ছিল।
এর বন্ধ হওয়া পেজ থেকে সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভকারীদের নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল সেনাবাহিনী।
১ ফেব্রুয়ারি ভোরে গণতন্ত্রপন্থী নেতা অং সান সু চিসহ কয়েকশ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে দেশটিতে টানা বিক্ষোভ করছে হাজারো মানুষ।
সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি গুলিবিদ্ধ হওয়া এক তরুণী বৃহস্পতিবার রাজধানী নেপিদোর একটি হাসপাতালে মারা যান।
শনিবার দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডালায়ে পুলিশের গুলিতে মারা যান আরও দুই বিক্ষোভকারী।
সম্প্রতি মিয়ানমারের গণতন্ত্রী দল ও মানবাধিকারকর্মীদের সহায়তা করা শুরু করেছে ফেসবুক।
২০১৮ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও বর্তমান সামরিক শাসক মিন অং হ্লাইয়াংসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল ফেসবুক।
এছাড়াও সংঘবদ্ধভাবে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে মিয়ানমারের আরও কয়েকশ পেজ বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক।
মিয়ানমারে তথ্য ও খবরের অন্যতম ফেসবুক। দেশটির ৫ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে অন্তত ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন।