শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে বুধবারই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন, কাশ্মীর ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আর কোনো মতভেদ নেই। পাকিস্তান বিশ্বাস করে, কাশ্মীর নিয়ে মতভেদও আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলা সম্ভব।
বৃহস্পতিবার ভারত ও পাকিস্তানের ডাইরেক্টর জেনারেল অব মিলিটারি অপারেশন (ডিজিএমও) এক যৌথ বিবৃতিতে জম্মু ও কাশ্মীরের আন্তর্জাতিক সীমান্তে গুলিবর্ষণ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সীমান্তে উভয় দেশের স্বার্থে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং স্থায়ী শান্তি অর্জনের লক্ষ্যে যে বিষয়গুলো সীমান্তে শান্তি বিঘ্নিত এবং সহিংসতার দিকে পরিচালিত করে, সে বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে দুই দেশের ডিজিএমও একে অপরের মূল সমস্যা এবং উদ্বেগকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে।’
বিবৃতি অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে এই চুক্তি কার্যকর হবে।
২০০৩ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় অস্ত্র-সংবরণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু তাতে বিশেষ কোনো লাভ হয়নি। গত গ্রীষ্মে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনারা সর্বাধিক পারস্পরিক গোলাগুলি বর্ষণে লিপ্ত ছিল।
গত বছর অক্টোবর মাসে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব দাবি করেন, ২০০৩ সালের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি বারবার লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তানি সেনারা। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৩ হাজার ৮০০ বারেরও বেশি সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ, নিয়ন্ত্রণরেখায় ড্রোনে করে অস্ত্র ফেলার উদাহরণও রয়েছে।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা বৃহস্পতিবার বলেছেন, দুদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে চালু থাকা হটলাইনে দুই ডিজিএমও বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চালাচ্ছিলেন সীমান্তে গোলাগুলি বিনিময় বন্ধ করার জন্য। কারণ এ ধরনের গোলাগুলি বর্ষণে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন সীমান্তসংলগ্ন জনপদগুলোর বাসিন্দারা। সীমান্তের দুপারেই সাধারণ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। কিছুদিন আলোচনা চলার পর বুধবার দুই ডিজিএমও ঐকমত্যে পৌঁছান।