পশ্চিমাঞ্চলে শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের পাশাপাশি এবার আরেক ক্ষুদ্র মুসলিম সম্প্রদায় আতসুলসদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে চীন সরকারের বিরুদ্ধে।
আর এবার সেটা দেশের আরেক প্রান্তে, দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনান প্রদেশের দ্বীপ শহর সানিয়ায়।
প্রায় ১ হাজার বছর ধরে শহরটিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাস। শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা মেলে অর্ধচন্দ্রাকৃতির গম্বুজওয়ালা মসজিদ। মুসলিম অধ্যষিত ঐতিহ্যবাহী এই শহরকে ঢেলে সাজানো শুরু করেছে চীন সরকার। এর অংশ হিসেবে শহরের দোকান ও বাড়ির সামনে আরবি হরফে লেখা ‘আল্লাহু আকবর’ মুছে ফেলেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। তার ওপর সেঁটে দেওয়া হচ্ছে ‘চায়না ড্রিম’ লেখা সরকারি স্লোগান।
শুধু তাই নয়, খাবার দোকানে হালাল খাবারের মেন্যু সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দুটি মাদ্রাসা। নারী শিক্ষার্থীদের হিজাব নিষিদ্ধ হয়েছে।
আতসুলস সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ১০ হাজার মুসলিমের বাস সানিয়া শহরে। সম্প্রতি এই শহরে নজর পড়েছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির। বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন বন্ধের নামে অভিযান শুরু করেছে সরকার।
ইসলামিক স্কুলটি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ
স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা বলছেন, কয়েক বছর আগেও তাদের সঙ্গে মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্ককে সাধুবাদ জানাতো বেইজিং। নতুন বিধিনিষেধের পক্ষে চীন সরকার এখন বলছে, ধর্মীয় উগ্রবাদ বন্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সাত বছর আগে পশ্চিমে জিনজিয়ান প্রদেশে ধারাবাহিক হামলা হলেও সে তুলনায় শান্ত ছিল সানিয়া।
আতসুলসরা বহু শতাব্দী ধরে এই শহরে বাস করছেন।
আতসুলস সম্প্রদায়ের ওপর এমন বিধিনিষেধ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আসল রূপ উন্মোচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আমেরিকার মেরিল্যান্ডের ফ্রস্টবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মা হাইয়ুন।
তিনি বলেন, ‘এটা আসলে প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা। এটা পুরোপুরি ইসলামবিরোধী।’
চীন সরকার অবশ্য বরাবর এই অভিযোগ নাকচ করে আসছে। তবে শি জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর উত্তর-পশ্চিম ও মধ্য চীনে অনেক মসজিদ, মাজার এবং ইসলামিক স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে।
নিপীড়ন সবচেয়ে বেশি চলছে উইঘুর মুসলিমদের ওপর। শিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমের বাস। সেখানকার বাসিন্দাদের জোর করে আটক রাখার পাশাপাশি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতে জোরজবরদস্তি করার অভিযোগ আছে।