জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন (সংশোধন) বিলের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন ভারতের অমিত শাহ।
শনিবার লোকসভায় এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উপযুক্ত সময়ে জম্মু-কাশ্মীরকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়া হবে।
বিলটি পরে লোকসভায় পাস হয়।
লোকসভায় অমিত শাহ বলেন, ‘অনেক সাংসদ বলেছেন এই বিলটি পেশ করার মানে হলো জম্মু-কাশ্মীরকে আর রাজ্যের মর্যাদা দেয়া হবে না। আমি বিলটি পেশ করেছি এবং আমি স্পষ্ট করে জানাচ্ছি এর উদ্দেশ্য কী। এখানে কোথাও লেখা নেই, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফেরানো হবে না।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে কি কোনো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে রাজ্যের মর্যাদা দেয়া হয়নি? অতীতে কি কখনও কোনো সীমান্তবর্তী অঞ্চলকে রাজ্যের মর্যাদা দেয়া হয়নি? তা হলে জম্মু ও কাশ্মীর এসবের থেকে আলাদা হবে কী করে? আমি আবারও বলছি, এই বিলের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। রাজ্যের মর্যাদা সঠিক সময়ে ফেরানো হবে।’
শনিবার বিরোধীরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চান, ‘রাজ্য ভাগ ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর কী এমন উন্নতি হয়েছে ভারতের সীমান্ত রাজ্যের? কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিষয় তুলে শাহকে আক্রমণ করেন কংগ্রেসের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘এতদিন হয়ে গেল, এরপরেও কাশ্মীরের পণ্ডিতদের জমি ফিরিয়ে দিতে পারেনি কেন্দ্র সরকার। কেন নির্বাচনী ইশতেহারে বিজেপি কাশ্মীর থেকে বিতাড়িত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল? তাহলে কি নির্বাচন মেটার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিশ্রুতিও হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে বিজেপির?’
কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে অনেকবার প্রশ্ন করা হয়েছে, অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সময় যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার কী হলো? আগের সরকার গত ৭০ বছরে কী করেছে তার খতিয়ান দিয়েছে? ৩৭০ বাতিলের পর ১৭ মাস পার হয়েছে। আর তাতেই সরকার কী করেছে এতদিনে সেটা জানতে চাইছেন? আপনারা ঠিকঠাক কাজ করলে এটা জানতে চাইতেন না।’
কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অমিত শাহের জবাব, ‘আমার কোনো আপত্তি নেই। আমি সবকিছুর হিসাব দেব। কিন্তু বহু প্রজন্ম ধরে যারা সরকারে ছিলেন তারা নিজেদের জিজ্ঞেস করুন, হিসাব চাওয়ার যোগ্যতা নিজেদের আছে কি না!’
কাশ্মীর ও লাদাখ নিয়ে বিরোধীদের রাজনীতিকে কটাক্ষ করে তার মন্তব্য, ‘রাজনৈতিকভাবে লড়তে চাইলে ময়দানে আসুন, হোক লড়াই। কেউ ভয় পায় না। কাশ্মীর-লাদাখ দেশের স্পর্শকাতর অংশ। এটি আঘাতও পেয়েছে। সেটি নিয়ে চিন্তাও রয়েছে। এই কক্ষের কর্তব্য সেই আঘাত সারিয়ে তোলা নাকি ক্ষতে খোঁচা দেওয়া?’
সাংসদ এমপি প্রেমচন্দ্র জম্মু-কাশ্মীরের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি দাবি করেন। তিনি কাশ্মীরে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়েও দাবি তোলেন।
এর উত্তরে অমিত শাহ সব রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করেন, কাশ্মীরের ইস্যুকে রাজনৈতিক চেহারা না দিতে।