সৌদি আরবের আলোচিত নারী অধিকারকর্মী লুজাইন আল-হাতলুলকে বন্দি রাখার ঘটনায় যথাযথ বিচারের দাবি জানিয়েছেন তার দুই বোন। একই সঙ্গে লুজাইনের ওপর আরোপ করা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিলেরও দাবি জানান তারা।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে অবস্থানরত লুজাইনের দুই বোন স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লুজাইনের বোন লিনা আল-হাতলুল বলেন, ‘আমরা এখন ন্যায়বিচার চাই। আমরা চাই তাকে পুরোপুরি ও শর্তহীনভাবে মুক্তি দেয়া হোক।’
লুজাইনের আরেক বোন আলিয়া আল-হাতলুল বলেন, ‘সে (লুজাইন) খুবই দৃঢ়। তার উচ্চাশা ধরে রাখার ক্ষমতা ও ইতিবাচক মানসিকতা দেখে আমি গর্ববোধ করি।’
সৌদি আরবে নারীর গাড়ি চালানোর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশটির পুরুষ অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা অবসানের দাবিতে সোচ্চার হাতলুলকে বন্দি করার প্রায় তিন বছর পর গত বুধবার মুক্তি দেয় দেশটির সরকার।
সৌদি আরবের বিচারক লুজাইনের সাজার কিছু অংশ স্থগিত করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তবে পাঁচ বছরের জন্য তাকে দেশের বাইরে পা রাখতে নিষেধ করা হয়।
শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর বর্তমানে সৌদি আরবে মা-বাবার সঙ্গে অবস্থান করছেন লুজাইন।
মানবাধিকার বিভিন্ন সংস্থা ও লুজাইনের পরিবারের অভিযোগ, লুজাইনকে কারাগারে ইলেকট্রিক শক, বেত্রাঘাত, যৌন নির্যাতনসহ অন্য আরও নির্যাতন করা হয়।
তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে সৌদি সরকার।
২০১৮ সালের মে মাসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে গ্রেপ্তার করা হয় লুজাইনকে। সে সময় সেখানে পড়াশোনা করছিলেন তিনি।
ওই বছরের ডিসেম্বরে সৌদি আরবের আদালত লুজাইনকে প্রায় ছয় বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়, যা নিয়ে সৌদি সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
২০১৮ সালে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে ফেলার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে লুজাইনসহ কমপক্ষে ১২ জনের মতো নারী অধিকারকর্মীকে গ্রেপ্তার করে সৌদি সরকার।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুই জন এখনও কারাগারে রয়েছেন।