মিয়ানমারে গণবিক্ষোভের মুখে সামরিক অভ্যুত্থানের সাফাই গাইলেন দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে সোমবার সন্ধ্যায় সেনাপ্রধান জানান, নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির করে জয় পেয়েছে সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি।
স্থিতিশীলতার স্বার্থে কিছু জায়গায় বিধিনিষেধ আরোপ হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এসব বিধিনিষেধের মধ্যে থাকছে কারফিউ এবং জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা।
এরই মধ্যে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালাসহ বেশ কিছু এলাকায় রাত আটটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত কারফিউ জারি হয়েছে। পাঁচ জনের বেশি মানুষের সমাগমে দেয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
ভাষণে সেনাপ্রধান আরও জানান, নির্বাচন কমিশন ভোটের অনিয়ম তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে। বৈধ নির্বাচনি প্রচারেও বাধা দিয়েছে তারা।
অবশ্য এসব অভিযোগ শুরু থেকেই মানতে নারাজ নির্বাচন কমিশন। তারা জানিয়েছে, সেনাবাহিনী তাদের অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নতুন নির্বাচন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আপনারা আবেগ দিয়ে না ভেবে সত্য উদ্ঘাটনে মনোযোগী হোন। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।'
এদিকে সময়ের সঙ্গে তীব্র হচ্ছে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। সোমবার রাজধানী নেপিদো, মান্দালা ও ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ করে কয়েক লাখ মানুষ। শিক্ষক, আইনজীবী, ব্যাংকার এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশ নেয়।
এর আগে রোববার সাধারণ মানুষদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। ২০০৭ সালে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ‘গেরুয়া বিপ্লবের’ পর রোববার মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড়।
ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। ছবি: এএফপি
পয়লা ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন গ্রেপ্তারের পর গৃহবন্দী করা হয় অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট মিন উইন্টসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের।