ভারতে পাস হওয়া বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইনের বিরোধিতা করে দেশটির কৃষকেরা দিল্লিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলনে থাকলেও এই আইনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন বলছে, নতুন কৃষি আইনের ফলে ভারতের বাজার দক্ষতার উন্নতি হবে।
ভারতের কৃষক বিদ্রোহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রবিষয়ক দপ্তরের এক মুখপাত্র বুধবার বলেন, যেকোনো ধরনের মতানৈক্য আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানে উৎসাহ দেয় ওয়াশিংটন।
এতে কৃষি আইনের সমর্থনে বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে। তাদের মতে, এই আইনের ফলে ভারতের কৃষি খাত ঢেলে সাজানো যাবে; এই খাতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবে এবং কৃষকদের বাজারের প্রসার ঘটবে।
ওই মুখপাত্র বলেন, ‘সাধারণত, ভারতের বাজার ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটাবে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ টানবে এমন উদ্যোগকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়।
‘গণতান্ত্রিক উপায়ের যেকোনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে আমাদের সমর্থন রয়েছে এবং দেখা গেছে, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টও একই কাজ করেছে।’
গত বছরের শেষ দিকে ভারতের আইনসভায় কৃষি-সংক্রান্ত তিনটি সংস্কার আইন পাস করা হয়। এসব আইনে দেশটির কৃষি কার্যক্রমে ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠা হবে বলে মনে করছে কৃষকেরা।
নতুন আইনের ফলে কৃষকদের শঙ্কা তাদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ফসল কিনতে সরকার যেমন বাধ্য থাকবে না, তেমনি বাজারের ওপর নিয়ন্ত্রণও থাকবে না। দাম-দর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা চলে যাবে কোম্পানিগুলোর হাতে। এতে কোম্পানিগুলোর দয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে যেতে পারে তাদের জীবন।
আইনগুলো পাসের আগে থেকেই বিরোধিতা করে আসছিল ভারতের কৃষক সমাজ। আইন পাসের পর রাস্তায় নেমে এসেছে তারা। দিল্লিতে প্রায় আড়াই মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কৃষকেরা।
এই অচলাবস্থা নিয়ে সরকার ও কৃষকদের মধ্যে অনেকবার বৈঠক হলেও কোনো ফল আসেনি। অবশ্য কৃষি আইন স্থগিত রাখতে সরকারকে নির্দেশনা দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু এই আইন বহাল রাখতে অনড় ভারত সরকার। দেশটির বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কৃষিখাত পুনর্গঠনের জন্য যে আইন পাস হয়েছে ‘খুব কমসংখ্যক কৃষকই’ এর বিরোধিতা করছে।
এই আইনে বাইডেন প্রশাসন সমর্থনের ইঙ্গিত দিলেও কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আইনপ্রণেতা।
কংগ্রেসম্যান হ্যালে স্টিভেন্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ভারতে কৃষি খাত পুনর্গঠন আইন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের বিপক্ষে নানা কার্যক্রমে আমি উদ্বিগ্ন।’
কৃষকদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন আরেক কংগ্রেসম্যান ইলহাম ওমর। কৃষকদের ওপর নিপীড়নে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভাগনি মিনা হ্যারিস। তিনি জানিয়েছেন, হামলার শিকার বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ গণতন্ত্র।