বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিয়ানমার নিয়ে ভারতের উদ্বেগ, সতর্ক চীন

  •    
  • ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:১৫

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবশ্যই বহাল থাকবে।’ অন্যদিকে দেশটির ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র চীন বলেছে, তারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেনাবাহিনীর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী বইছে নিন্দার ঝড়। জাতিসংঘ মহাসচিব, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে অং সান সু চিসহ গ্রেপ্তার সবাইকে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে সামরিক নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক জানান, আন্তোনিও গুতেরেস মনে করেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ গণতন্ত্রের ওপর নগ্ন আঘাত।

তিনি বলেন, দেশটির সামরিক-বেসামরিক সব নেতার গণতান্ত্রিক সংস্কারের বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করা উচিত। সংকট সমাধানে তাদের অবশ্যই সংলাপে অংশ নিতে হবে। সবাইকে অবশ্যই উসকানি ও সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সুচিকে গ্রেপ্তার ও জরুরি অবস্থা জারির ঘটনায় কড়া বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন পিসাকি বলেন, ‘মিয়ানমারের সাম্প্রতিক নির্বাচনের ফল পাল্টে দেয়া বা মিয়ানমারের গণতন্ত্রে উত্তোরণের পথে যে কোনো বাধা তৈরির চেষ্টার বিরোধী যুক্তরাষ্ট্র।

‘সেনাবাহিনী ও অন্য সবাইকে গণতান্ত্রিক নিয়ম, আইনের শাসন মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, নেপিদোর সোমবার ভোরের ঘটনায় মিয়ানমারের চলমান উন্নয়ন থমকে পড়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।

‘মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক উত্তোরণের প্রক্রিয়ায় ভারত সব সময়ই অবিচল সমর্থন দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আইনের শাসন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অবশ্যই বহাল থাকবে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

মিয়ানমারের ঘটনায় সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র চীন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা মিয়ানমারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

‘আমরা সেখানকার ঘটনাপ্রবাহ জানার চেষ্টা করছি। মিয়ানমার চীনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমরা আশা করি, সংবিধান ও আইন মেনে সব পক্ষ তাদের বিরোধ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।’

অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেইন এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আবারও ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের যে চেষ্টা করছে এবং অং সান সুচি ও প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্টকে আটকের যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।’

মেরিস পেইন বলেন, ‘আমরা সামরিক বাহিনীকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে এবং অবৈধভাবে আটক সমস্ত বেসামরিক নেতাকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানাই।’

আশিয়ানের প্রভাবশালী দেশ সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি মিয়ানমারের সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘সিঙ্গাপুর মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং আশা করি সব পক্ষ সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করবে, সংলাপ বজায় রাখবে এবং ইতিবাচক ও শান্তিপূর্ণ ফল অর্জনে কাজ করবে।’

সুচিকে গ্রেপ্তার ও জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাপান।

দেশটির মন্ত্রিপরিষদ সচিব ক্যাটসুনোবু কাটো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জাপান সরকার মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সেখানকার জাপানি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাপান বিশ্বাস করে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সংলাপের মাধ্যমে চলমান সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করা জরুরি।’

পূর্ব এশিয়ার প্রভাবশালী দেশ ইন্দোনেশিয়া মিয়ানমারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে সব পক্ষকে ‘গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক নীতি’ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারে শান্তি ও আইনের শাসন বহাল রাখার আহ্বান জানিয়েছে। নির্বাচন কেন্দ্রিক বিরোধ সংলাপের মাধ্যমে সমাধানের তাগিদও দিয়েছে দেশটি।

তবে সেনা অভ্যুত্থানকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছে ফিলিপাইন ও কম্বোডিয়া।

মানবাধিকার সংগঠনের নিন্দা

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি এবং শীর্ষ রাজনীতিকদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

সংস্থার এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস অং সান সুচিসহ অন্যায়ভাবে আটক সব রাজনৈতিক বন্দির নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর এই পদক্ষেপ গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও মিয়ানমারের জনগণের নিজস্ব সরকার গঠনের অধিকারের প্রতি সম্পূর্ণ অসম্মান।’

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উপ আঞ্চলিক পরিচালক মিং ইউ হা মিয়ানমারে রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তারকে ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জরুরি অবস্থা জারির পর ইন্টারনেট সংযোগ ও টেলিযোগাযোগ বন্ধ রাখা এমন অস্থিতিশীল সময়ে জনগণের জন্য আরও হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর