আন্দোলনরত ৪১টি প্রধান কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ আবার নাকচ করে দিল ভারত সরকারের প্রস্তাব। বুধবার যৌথ মঞ্চের সঙ্গে আলোচনার সময় সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল, আগামী ১৮ মাস নতুন তিনটি কৃষি আইন স্থগিত রাখতে রাজি আছে তারা।
এই ১৮ মাস আলোচনা চলুক কৃষি আইন নিয়ে। আলোচনায় কৃষক নেতারা বলেছিলেন, নিজেদের মধ্যে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা। বৃহস্পতিবার যৌথ মঞ্চের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সরকারের প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হবে না। নতুন তিনটি কৃষি আইন বাতিল না করলে আন্দোলন চলবে।
কৃষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের অন্যতম নেতা ড. দর্শন পাল বলেছেন, ‘৫৮ দিন আমরা রাস্তায় বসে আছি। সরকার নানাভাবে আমাদের আন্দোলনকে ভাঙার চেষ্টা করছে। এখন দেড় বছর আইন স্থগিত রাখার অদ্ভুত প্রস্তাব নিয়ে এসেছে সরকার। সরকারের এই প্রস্তাব কৃষকদের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত, পুরোপুরি বাতিল করতে হবে তিনটি আইন।’
শুক্রবার কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে সরকারের পরবর্তী বৈঠক। সেই বৈঠকে সরকারের সর্বশেষ প্রস্তাব খারিজ করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব।
কৃষকদের আন্দোলনের মূল দাবিগুলি নিয়ে সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় যেমন কোনো সমাধানসূত্র মিলছে না, তেমনই ২৬ জানুয়ারি কৃষকদের ট্রাকটর প্যারেড নিয়েও পুলিশের সঙ্গে কৃষকদের বৈঠকে জট খুলছে না। সোমবার থেকে প্রতিদিনই দিল্লি, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কর্তারা কৃষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন।
নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লির আউটার রিং রোডে ট্রাকটর মিছিল করার অনুমতি দিতে নারাজ পুলিশ। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে দিল্লির বাইরে কুন্ডলি-মানেসর-পালওয়াল হাইওয়ে এবং কুন্ডলি-গাজিয়াবাদ-পালওয়াল হাইওয়েতে ট্রাকটর মিছিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল দিল্লি পুলিশের তরফে। কিন্তু বৃহস্পতিবার কৃষক সংগঠনগুলি সেই প্রস্তাব খারিজ করেছে।
দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) মণীশ অগ্রবাল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘নির্বিঘ্নে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা দিল্লি পুলিশের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনেরই কাজ করছি আমরা। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাবে না।’
অন্যদিকে, ক্রান্তিকারী কৃষক ইউনিয়নের নেতা দর্শন পাল বলেন, ‘আমরা রিং রোডে মিছিলের অনুমতি পাইনি। পুলিশকে আমরা জানিয়েছি, সুশৃঙ্খলভাবে মিছিল করব। কোনোভাবেই আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করব না।’
শুক্রবার আবার এ বিষয়ে আলোচনা হবে পুলিশ ও কৃষক সংগঠনগুলির। অন্যদিকে, কৃষক আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র দিল্লি-হরিয়ানার সিংঘু সীমান্তে ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি কৃষক সংসদ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে অংশ নেবেন বিশিষ্ট আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ, প্রবীণ সাংবাদিক পি সাইনাথ, গণআন্দোলনের নেত্রী মেধা পাটেকর, প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী সোমপাল শাস্ত্রীসহ অনেক প্রাক্তন ও বর্তমান সাংসদ।