ভারতের উত্তর প্রদেশে এক পুরোহিত ও তার দুই শিষ্যের বিরুদ্ধে ৫০ বছরের নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুদাউন জেলায় রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে এনডিটিভি।
এ ঘটনায় করা মামলায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে সোমবার নিহত নারীর ছেলে জানান, প্রার্থনার জন্য প্রতিদিনের মতো রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে মন্দিরে গিয়েছিলেন তার মা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার মাকে পুরোহিত ও তার শিষ্যরা তাদের গাড়িতে করে বাড়ির সামনে রেখে দ্রুত চলে যান। এর কিছু সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয় তার মায়ের।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর ছবিতে দেখা যায়, বাড়ির সামনে চাদর মোড়ানো নারীকে একটি খাটে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তার শরীরের নিচের অংশ রক্তে ভেজা; একটা পা ভাঙা।
ময়নাতদন্তে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ইয়াশ পাল সিং। তিনি বলেন, ‘ওই নারীর যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্নের পাশাপাশি এক পা ভাঙা ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ মৃত্যুর কারণ।’
এ ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি করে স্থানীয় থানা পুলিশ। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে চলে এলে বুদাউন পুলিশপ্রধান সংকল্প শর্মার হস্তক্ষেপে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যা মামলা নেয়া হয়।
দুই জনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে টুইটে নিশ্চিত করেছেন বুদাউন পুলিশপ্রধান। তিনি আরও জানান, শুরুতে মামলা না নেয়ায় স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সংকল্প শর্মা টুইটে লেখেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে স্থানীয় থানার ইনচার্জের গাফিলতি পাওয়া গেছে। তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছি।’
এদিকে অভিযুক্ত পুরোহিত এক ভিডিওতে দাবি করেছেন, কুয়ায় পড়ে আহত হয়েছিলেন ওই নারী। তিনি ও তার শিষ্যরা ওই নারীকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেন। সে সময় তিনি জীবিত ছিলেন।
ঘটনাটি নজরে এসেছে ন্যাশনাল কমিশন ফর উইমেন প্রধান রেখা শর্মার। তিনি জানান, বিষয়টি পর্যবেক্ষণে বুদাউনে একটি দল পাঠিয়েছেন তারা।
কয়েক মাস আগে উত্তর প্রদেশের হাতরাসে এক দলিত নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠে একই গ্রামের উচ্চ বর্ণের চার জনের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত ওই নারী কয়েক দিন পর মারা যান।
স্বজনদের আটকে রেখে জোরপূর্বক শেষকৃত্য করে পুলিশ। ছবি: এনডিটিভি
সে সময় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। নিহত নারীর স্বজনদের আটকে রেখে জোরপূর্বক শেষকৃত্য করে পুলিশ। ঘটনাটি জানাজানি হলে ভারতজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়ে যোগী আদিত্যনাথ সরকার।