পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া ২০ বছর বয়সী এক তরুণকে কবর দেয়ার বদলে দাহ করায় ক্ষুব্ধ শ্রীলঙ্কার মুসলমানরা।
গত সপ্তাহে ওই তরুণকে দাহ করা হয় বলে আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনায় মৃত ব্যক্তিদের কবর ও দাহ দুটোই করা যাবে। কিন্তু মার্চে সংস্থাটির নির্দেশনা উপেক্ষা করে করোনায় মৃত বা করোনা সন্দেহে মৃতদের দাহ বাধ্যতামূলক করে শ্রীলঙ্কা।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৫ মুসলমানকে ধর্মীয় রীতি না মেনে দাহ করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে সবচেয়ে কমবয়সী শায়েখ নামের এক শিশু। ৯ ডিসেম্বর তাকে রাজধানী কলম্বোর বরেল্লা এলাকায় দাহ করা হয়।
শায়েখের বাবা এমএফএম ফাহিম বলেন, ছোট্ট সন্তানের দেহ পুড়ছে, এ দৃশ্য দেখার মতো সাহস তার ছিল না।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেউই আমার ছেলের দাহের বিষয়ে কোনো নথিতে সই করিনি। তা সত্ত্বেও কীভাবে তার দাহ হলো, তা আমার পরিবার ও বন্ধুরা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছিলেন।
‘জবাবে তারা বলেন, শিশুটি যেহেতু করোনায় মারা গেছে, তাকে দাহ করতে হবে। তাদের কাছে আমাদের প্রশ্নের কোনো সদুত্তর ছিল না। কিছুটা শান্তি পেতাম যদি তারা তাকে জোর করে দাহ না করে কবর দিত। বিষয়টি অসহনীয়।’
শ্রীলঙ্কায় করোনায় মৃতদের বাধ্যতামূলক দাহ নীতি দেশটির ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অসহায় ও ক্ষুব্ধ করছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল ইউনিটি অ্যালায়েন্সের (এনইউএ) নেতা আজাথ স্যালি বলেন, ‘এটি এক ধরনের সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্ত। সংখ্যালঘুদের অনুভূতিতে আঘাত করছে সরকার। তারা ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা ও মৌলিক মানবাধিকার মানছে না।’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তাদেরকে কবর দেয়ার অনুমতি দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে শ্রীলঙ্কা সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান স্যালি।
দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনায় মৃতদের মরদেহ কবর দিলে তা ভূগর্ভস্থ পানি দূষিত করবে।
মুসলমানরা মৃতদেহ কবর দিয়ে থাকে। এ জন্য নির্ধারিত রীতিনীতি রয়েছে।