ভারত সামনের মাসে বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়।
গত বছর বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে শরণার্থী হয়ে আসা অমুসলমানদের জন্য নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে ভারত।
রোববার কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘জানুয়ারি থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করা হবে।’
আইনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় সন্ত্রাসের কারণে শরণার্থী হয়ে আসা হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিদের শর্ত সাপেক্ষে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মুসলিমদের বাদ রাখা হয়েছে এ তালিকায়।
ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিরোধী দলের অভিযোগ, এ সংশোধনী সংবিধানের মূলধারার বিরোধী। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা সংবিধানে নেই।
ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে এ আইনের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। উত্তর-পূর্ব ভারতে এ সংশোধনীর বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের উদ্বাস্তুরা এই আইন কার্যকর দেখতে চান। তাদের নেতাদের দাবি, রাজ্যের তিন কোটি মতুয়ার মধ্যে ভোটার প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে তাই দেশভাগের পর থেকে সীমান্তের ওপার থেকে আসা মতুয়াদের ভোট বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া অধ্যুষিত এলাকায় ভালো ফল করে বিজেপি।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নতুন আইনকে কার্যকর করার উদ্যোগ এখনও নেয়নি।
কৈলাসের ওই বক্তব্যের সমালোচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলটির সংসদ সদস্য সৌগত রায় বলেন, ‘পুরোটাই ভাঁওতা। বিধানসভা নির্বাচনে জিততে মতুয়াদের খুশি করতে চাইছে বিজেপি।’
এদিকে আসামে কৈলাসের এ বক্তব্যের পর নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্যটির বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা কিছুতেই এ আইন কার্যকর হতে দেবে না।
আসামের নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির চেয়ারম্যান তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাঙালিকে হিন্দু ও মুসলিমে ভাগ করার ঘৃণ্য চক্রান্ত কার্যকর করতেই এ আইন। মূর্খরা জানে না, বাঙালি মানে বাঙালিই। বাঙালি হিন্দু হয় না, মুসলিমও হয় না।'
এ বিষয়ে আসামের বিজেপি নেতারা কোনো মন্তব্য করেননি।
আগামী এপ্রিল-মে’তে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।