গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সরকার পতনের এক বছর পূর্তিতে বিক্ষোভ করেছে লেবাননের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির রাজধানী বৈরুতে বিক্ষোভে অংশ নেন এক হাজারেরও বেশি মানুষ।
ওই সময় লেবাননের পতাকা ও ব্যানার হাতে রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা। তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পেরিয়ে বৈরুত বন্দরের ধ্বংসস্তূপের দিকে অগ্রসর হন।
৪ আগস্ট ভয়াবহ বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয় বৈরুত বন্দর। ওই ঘটনায় ১৯০ জনেরও বেশি নিহত ও সাড়ে ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হন।
বিস্ফোরণের জন্য দেশটির ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতি ও অযোগ্যতাকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা।
তালা লাদকি নামে ২৫ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘গত এক বছরে দেশে অনেক কিছুই ঘটেছে। ওই সব ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আমি ওয়াকিবহাল। জানি, এটা একটা লড়াই। আমি এখনও আশাবাদী। তারপরও গত বছরের তুলনায় এ বছর একটু বেশি ক্লান্ত।’
রাতের দিকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে একপর্যায়ে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এক বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের ফের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, ‘জনপ্রিয় আন্দোলনের পর এক বছর কেটে গেছে। সংস্কারের দাবি পূরণে একসঙ্গে কাজ করতে আমি এখনও রাজি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া কোনো সংস্কারকাজ সম্ভব নয়। আর সংস্কারের জন্য খুব একটা দেরিও হয়নি।’
লেবাননে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ক্রিস র্যাম্পলিং টুইটবার্তায় বলেন, ‘প্রশাসনে ভালো মানুষ আছেন। তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। লেবাননের জনগণের সঙ্গে আমি আছি।’
তিনি বলেন, ‘আশাহত না হওয়ার কারণ রয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিবর্তন ও বিদ্যমান নিষিদ্ধ বিষয় নিয়ে এখন প্রকাশ্যে তর্ক হচ্ছে।’
এদিকে লেবাননবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক ইয়ান কুবিশ এক বিবৃতিতে আবারও দেশটিতে সংস্কারপন্থি সরকারের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারকে অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত সংস্কারেরও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘লেবাননবাসী কী ধরনের সংস্কার চান, তা এখন সবাই জানে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বারবার সেসব বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু আদতে কিছুই করেনি। এতে বিদ্যমান অচলাবস্থা স্থায়ী রূপ নিয়েছে।’
গণঅভ্যুত্থানের পরপরই লেবানন অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়ে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস ও বৈরুতের ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর দেশটির বর্তমান অবস্থা বেশ নাজুক।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই