মিয়ানমারের একটি বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীকে সরাসরি অর্থের জোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইয়াঙ্গুনভিত্তিক মিয়ানমার ইকোনোমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের (এমইএইচএল) কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে লভ্যাংশ হিসেবে এক হাজার ৮০০ কোটি ডলার পেয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে এমইএইচএলের। এ কোম্পানির টাকা পেয়েছেন রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠা সেনা কর্মকর্তারাও। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা বোর্ডের সবাই জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা।
ফাঁস হওয়া কিছু নথির ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে অ্যামনেস্টি। এ বিষয়ে অ্যামনেস্টির ব্যবসা, নিরাপত্তা ও মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মার্ক ডামেট বলেন, 'মিয়ানমারের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক কিছু মানবাধিকার লঙ্ঘনে যুক্ত ব্যক্তিরাও এমইএইচএলের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের সুবিধা পেয়েছেন।'
নথির বিষয়ে তিনি বলেন, এমইএইচএলের বিস্তৃত ব্যবসা থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কীভাবে সুবিধা পেয়েছে, তা তুলে ধরেছে ফাঁস হওয়া নথিগুলো। এমইএইচএল ও সেনাবাহিনী যে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, সেটিও উঠে এসেছে নথিগুলোতে।
এমইএইচএলের শেয়ারহোল্ডার রেকর্ড থেকে দেখা যায়, কোম্পানিটির পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ বর্তমান ও সাবেক সেনা সদস্যদের হাতে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিযুক্ত কমব্যাট ডিভিশনের সদস্যসহ বিভিন্ন সামরিক ইউনিট কোম্পানিটির এক-তৃতীয়াংশের মালিক।
অ্যামনেস্টির নথি অনুযায়ী, কোম্পানির কাছ থেকে সরাসরি আর্থিক সুবিধা পাওয়া সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লাইংও রয়েছেন। ২০১০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে হ্লাইং পাঁচ হাজার শেয়ার কিনেছেন। এ সময়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে তিনি পান আড়াই লাখ ডলারের মতো অর্থ।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান তদারকির অভিযোগ আছে হ্লাইংয়ের বিরুদ্ধে। ওই রাজ্যে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত ও তাকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।