বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনাকালেও পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক উত্তাপ

  • তরুণ চক্রবর্তী, কলকাতা থেকে   
  • ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৩:১৮

সিপিএম বা কংগ্রেস নয়, পশ্চিমবঙ্গে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের মূল রাজনৈতিক লড়াই বিজেপির সঙ্গে। ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই তৎপর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, বিজেপিও প্রস্তুত হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের শাসন প্রতিষ্ঠায়। সবমিলিয়ে লকডাউনের মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের হাওয়া গরম। টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর কঠিন পরীক্ষায় মমতা ব্যানার্জি।  ৩৫ বছরের বাম শাসনকে উৎখাত করে ২০১১ সালে বাংলার মাটিতে তিনি ঘাসফুল (তৃণমূলের নির্বাচনী প্রতীক) ফোটাতে সক্ষম হন। ঠিক ১০ বছর পর সেই ঘাসফুলকে হঠিয়ে বাংলায় পদ্মফুল (বিজেপির ভোট প্রতীক) ফোটাতে চায় বিজেপি।  পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ১২টি রাজ্যের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই সরকারে রয়েছে কংগ্রেস, তাও কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে গঠিত পৃথক দল। এই অঞ্চলে বাকি কোথাও কোনো কংগ্রেসই ক্ষমতার ধারেকাছে নেই। পশ্চিমবঙ্গেও তৃণমূল কংগ্রেসের ভিত অনেকটাই টলিয়ে দিয়েছে বিজেপি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে নিজেদের আসন সংখ্যা দুই থেকে বাড়িয়ে ১৮-য় নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের আসন ৩৬ থেকে কমে হয়েছে ২২। আর এতেই কাঁপুনি শুরু হয়ে যায় তৃণমূলের। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের রাজনীতিতে সিপিএম-সহ বাম দলগুলির জনসমর্থনের বেহাল দশা ফুটে ওঠে।  সবকটি আসনে শোচনীয় পরাজয় হয় তাদের। মাত্র একটি আসনে তাঁরা জামানত ধরে রাখতে পেরেছে। বাম দলগুলোর জোটসঙ্গী কংগ্রেস জয় পায় মাত্র দুটি আসনে। এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা ব্যানার্জির ডান হাত বলে পরিচিত, ভারতের সাবেক রেলমন্ত্রী মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিতেই চিত্র বদলাতে থাকে দ্রুত। তাঁর হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থান দ্রুত গতি পায় বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান। মুকুল রায়ের হুমকি, মমতা ব্যানার্জিকে ক্ষমতাচ্যুত করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য পূরণে তিনি সংগঠনকে চাঙ্গা করার পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথমসারির নেতাদের দলবদলকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন। সহজে বিজেপিকে ময়দান ছেড়ে দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেসও। ভারতের ভোট কৌশলি প্রশান্ত কিশোর বা পিকে-কে এনে নির্বাচনী কৌশল রচনা করছেন মমতা ব্যানার্জি। সেইসঙ্গে ১০ বছরে তাঁর সরকারের সাফল্যকে তুলে ধরে প্রচারে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। বিজেপির পুঁজি সরকারের সার্বিক ব্যর্থতা। সেইসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে নিয়ে আসছে দলটি। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার মতো কোনো হেভিওয়েট মুখ কখনও সামনে আসেনি। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানিয়েছেন, ভোট হবে নরেন্দ্র মোদি বনাম মমতা ব্যানার্জি। তাই এখানে কাউকে আগে থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরবে না বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবারের ভোটে অনেক কিছুই নির্ভর করছে দল পরিবর্তনের ওপর। বহু তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। গত লোকসভা ভোটেও দলবদলই বাড়তি সুবিধা করে দেয় বিজেপিকে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী রাজ্যে ২৭ শতাংশের বেশি মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। এই ভোটের বেশিরভাগটাই তৃণমূলের পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কংগ্রেস ও সিপিএম কিছুটা পেলেও বিজেপির ভাগ নেই বললেই চলে। আর এটাকে পাখির চোখ করেই এগিয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শে বিশ্বাসী। তাঁরা মমতা ব্যানার্জির কর্মযজ্ঞেরও স্বাক্ষী। তাই তৃণমূলই জিতবে বলে পার্খবাবু দাবি করেন।

এ বিভাগের আরো খবর