বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোটের মুখে অসমে বাড়ছে বাঙালি বিদ্বেষ

  • তরুণ চক্রবর্তী, কলকাতা থেকে   
  • ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৫:১৩

ভারতের অসম রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ (এনআরসি) নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ চলছেই। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতেও সাধারণ মানুষের হয়রানি কমেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামী বছরের শুরুতে অসমে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারও সেখানে বাঙালি বিদ্বেষ বাড়ছে বলে অভিযোগ।

শতাধিক মানুষের মৃত্যুর বিনিময়ে অসমে এনআরসি তালিকা প্রকাশিত হয় ৩১ আগস্ট, ২০১৯। তাতে বাদ পড়েন ওই রাজ্যে বসবাসকারী ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন। এদের বেশিরভাগই হিন্দু বাঙালি।  বেশকিছু নেপালিও আছেন বাদ পড়াদের দলে।  অসমে নাগরিকত্ব পঞ্জীকরণের জন্য আবেদন করেছিলেন ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৪ জন। নাম নথিভূক্ত হয় ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ০০৪ জনের। বলা হয়, বাকিদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। সেই প্রক্রিয়া অবশ্য এক বছর পরও শুরু হয়নি। ফলে তালিকাভুক্ত ও বাদ পড়া উভয়ই রয়েছে বড় সঙ্কটে। 

সঙ্কট বুঝতে পেরেই তালিকা প্রকাশের ঘণ্টা খানেকের মধ্যে এনআরসি-ছুট  তেজপুরের সায়েরা বেগম (৬০) কুয়ায় লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। হাইলাকান্দির সাবিত্রী রায়ও গায়ে আগুন দিয়ে বেছে নেন আত্মহত্যার পথ। আরো বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে অসম জুড়ে।  অসমের রাজনীতি বহুকাল ধরে 'বাঙালি' ও 'বাংলাদেশ' নির্ভর। অসমিয়াদের একটা বড় অংশ মনে করেন, বাঙালি অনুপ্রবেশকারীরা অসমের সমস্যার মূল কারণ। অথচ, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ বা পূর্ব পাকিস্তান জন্ম নেওয়ার অনেক আগে থেকেই বাঙালিরা অসমে বসবাস করছেন। 

গোটা অসম দুটো উপত্যকায় বিভক্ত। বরাক ও ব্রহ্মপুত্র। বরাকে প্রায় ১০০ শতাংশ বাঙালি। ব্রহ্মপুত্রে অসমিয়ারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সেখানে বাঙালিরা আছে। ভোট এলেই শুরু হয় বাঙালি বিদ্বেষ। এই বিদ্বেষ দূর করতে করা হয়েছিল এনআরসি প্রক্রিয়া। বৈধ নাগরিকদের সনাক্ত করতে ভারতে এই প্রথম কোটি কোটি রুপি খরচ করে অসমে নেওয়া হয় এই কর্মসূচি।

সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানে এই কর্মসূচি হলেও এখনও অনুমোদন পায়নি এনআরসি। শাসক দল বিজেপির অনীহাই এর পিছনে বড় কারণ। হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি খুশি নয়। কারণ  তালিকায় বাদ পড়া বেশিরভাগই হিন্দু।  

বিজেপি নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মতে, ঠিকমতো তৈরি হয়নি এনআরসি তালিকা। তাই বহু বিদেশির নাম রয়ে গেছে তালিকায়। এই কারণে কেন্দ্রীয় সরকার বিজ্ঞপ্তিও জারি করেনি। বিরোধী দল কংগ্রেসও অনুমোদন দিতে রাজি নয় এনআরসিকে। কংগ্রেস নেতা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়ার অভিযোগ, বাঙালি ও অসমিয়াদের বিরোধ জিইয়ে রেখে ভোট বৈতরণী পার হতে চায় বিজেপি। তাই এনআরসি নিয়ে মোটেই আন্তরিক নয় সরকার। অন্যদিকে, অসম রাজ্য নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির সভাপতি, অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্যের আশঙ্কা লকডাউনের সুযোগ নিয়ে অসমকে বাঙালিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

তপোধীর ভট্টাচার্যের অভিযোগ, অসমকে বাঙালিশূন্য করাই এখন বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য। তিনি বলেন, 'বিজেপি বাঙালির শত্রু। এনআরসির নমে বাঙালি জাতিকে ধংস করার চেষ্টা চলছে। আমি মনে করি হিন্দু বাঙালি বা মুসলিম বাঙালি বলে কিছু হয় না। বাঙালি বাঙালিই। তাঁকে ধংস করার চক্রান্ত চলছে।‘ 

এ বিভাগের আরো খবর