নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যুক্ত আরও ১৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এনিয়ে হাসপাতালটিতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪১টিতে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় হাসপাতালটিতে এসব সিলিন্ডার পৌঁছে দেয়া হয়। এছাড়া কয়েক দিনের মধ্যেই উপজেলায় সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
স্বাস্থ্য বিভাগের সারাদেশের জরিপে গত মে মাসে ৪২১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেকের মধ্যে ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২৮তম স্থানে রয়েছে। এছাড়া চলতি বছরের মার্চ থেকে মে মাস (তিন মাস) পর্যন্ত জেলা পর্যায়ে ভাল সেবা দেয়ায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘ধামইরহাট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা। পাশেই ভারত। সীমান্তবর্তী হওয়ায় এ উপজেলায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। এতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন যেন সংকট না হয় তার আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’
তিনি জানান, আগে থেকেই হাসপাতালে সচল ২৬টি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। নতুন করে আরো ১৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১৫টি অক্সিজেন ফ্লো মিটার, অক্সিজেন ট্রলি, ৫০টি ক্যানুলা, এনআরবি মাস্ক ২৫টি এবং ১২টি পালস অক্সিমিটার যোগ হয়েছে।
ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা রোগীদের জন্য ১০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতাল ও বাড়িসহ ৪১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী আইসোলেশনে রয়েছে। আক্রান্তের হার ১৮ শতাংশ। গত দেড় বছরে উপজেলায় ২২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ছয় জন।
তিনি জানান, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালুর অনুমোদন হয়েছে। এখন টেন্ডারের অপেক্ষা। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
নওগাঁর করোনা পরিস্থিতি
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নওগাঁয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চারজন মারা গেছেন। এদের মধ্যে মান্দা উপজেলায় দুই জন, মহাদেবপুর উপজেলায় এক জন এবং পত্নীতলায় এক জন। এ নিয়ে জেলায় মোট মৃতের সংখ্যা ৯৪ জন।
নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর এ মোর্শেদ বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নওগাঁ জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ জন। এসময় মোট ২৮৪ টি নমুনা পরীক্ষা করে এই ৩৮ ব্যক্তির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
নওগাঁ সদর ও রানীনগর উপজেলায় সাতজন করে, আত্রাই, মহাদেবপুর ও বদলগাছি উপজেলায় দুই জন করে, মান্দা উপজেলায় ১০ জন এবং নিয়ামতপুর, সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় এক জন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হলো ৪ হাজার ৯৫৫ জন।
জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১২২ জন এবং এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮১৩ জন। জেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ১৪২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৯ জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং বাকিরা নিজেরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
নতুন করে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২৬১ জনকে। এ পর্যন্ত মোট কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয় ২৯ হাজার ৮১৭ জনকে। এ সময় নতুন করে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ২৬৭ জনকে এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৯২০ জনকে।
জেলায় বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক ৭২ জনসহ মোট কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৩ হাজার ৮৯৭ জন।