মাগুরা সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা। অধিকাংশ রোগীরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক।
মো. শামীম নামের এক যুবকের সঙ্গে বুধবার দুপুরে কথা হয়। শামীমের বাবার বয়স প্রায় ৮০ বছরের কাছাকাছি। গত রোববার তিনি করোনা আক্রান্ত হলে ওইদিন হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
শামীম জানান, চারদিন ধরেই তার বাবাকে সিলিন্ডারের অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে।
২৫০ শয্যার এই হাসপাতালের ৫ম ও ৬ষ্ঠ তলায় ৫০ শয্যার করোনা ওয়ার্ড করা হয়েছে। সিলিন্ডারের পাশাপাশি আছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ব্যবস্থা।
নুরুল মিয়া নামের এক সৌদি প্রবাসী জানান, তার চাচির জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়ায় সোমবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনা পরীক্ষা করে পজিটিভ ফল এসেছে। তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছে।
অনুরূপ মিরন মোল্লাও জানান, তার করোনা আক্রান্ত মায়ের তীব্র শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তবে অক্সিজেন দেয়ার পর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
বুধবার দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালে ৪৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন। তাদের বেশিরভাগকেই দেয়া হচ্ছিল অক্সিজেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক স্বপন কুমার কুন্ডু নিউজবাংলাকে জানান, হাসপাতালে ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে প্রায় ১৬০টির বেশি। সেই সঙ্গে কয়েকটি বড় সিলিন্ডারও আছে। এ ছাড়া সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই রয়েছে যার ধারণক্ষমতা প্রায় ৫ হাজার লিটার। ছয়টি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলাও আছে। তবে নেই আইসিইউ ব্যবস্থা।
এখন যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগই আগে থেকে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেকটা দেরিতে তারা হাসপাতালে আসায় শরীরের অন্যান্য অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে তাদের চিকিৎসা জটিল হয়ে যাচ্ছে।
স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীদের অধিকাংশকেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। আমাদের হাসপাতালের এখন পর্যন্ত সেই সক্ষমতা আছে। তবে পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয় তাহলে এই লোকবল ও অক্সিজেন সরবরাহ দিয়ে চিকিৎসা চালানো খুব কঠিন হয়ে যাবে।’
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা যায়, জুন মাসে ১ হাজার ৮৪ টি নমুনার মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩১৯ জনের দেহে। মে মাসে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৩৫ জনের নমুনায়। এদিকে জুলাই মাসের প্রথম ছয়দিনেই ২ শতাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় করোনায় মারা গেছে ৩১ জন।