দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখন গ্রামে ছড়াচ্ছে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম জানালেন, দেশের মোট করোনা রোগীর ৫০ শতাংশই গ্রাম এলাকার।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
খুরশীদ আলম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি গ্রামে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজখবর নিচ্ছি। দেশের করোনা সংক্রমণের ৫০ শতাংশের বেশি গ্রামে। রোগের তীব্রতা অনেক বেশি হওয়ায় তারা হাসপাতালে আসছেন।
‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের সঙ্গে অনলাইনে আমরা বৈঠক করেছি। গ্রামের রোগীরা হাসপাতালে আসছেন রোগে আক্রান্ত হওয়ার বেশ পরে, যখন পরিস্থিতি অনেক খারাপ হয়ে পড়ছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, গ্রামের মানুষের অনেকেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হলেও সাধারণ সর্দি-জ্বর বা কাশিতে আক্রান্ত বলে ধরে নিচ্ছেন। তারা নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন না।
তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের গ্রামে গ্রামে মাইকিং করার পরামর্শ দিয়েছি। বাড়ি বাড়ি রোগীর খোঁজ রাখতে বলেছি। এখন বর্ষার মৌসুম। সর্দি-জ্বরে বেশি মানুষ আক্রান্ত হবে এটা স্বাভাবিক। তাই, সবাই যাতে করোনা পরীক্ষা করতে পারে সেজন্য দরিদ্র জনগোষ্ঠীর করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করেছে সরকার।’
মূলত ভারতীয় ধরন শনাক্ত হওয়ার পর সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা আস্তে আস্তে গোটা দেশে ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে দেশে এখন ৫৭টি জেলা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দেশে এখন দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের ৭৮ শতাংশের দেহেই ভারতীয় ধরন তথা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। দেশজুড়ে জুন মাসে তাদের করা করোনার জিনোমসিকোয়েন্সে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিসেম্বর থেকে দেশে করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে জুন মাসের জিনোমসিকোয়েন্সে দেখা যায়, করোনায় আক্রান্তদের ৭৮ শতাংশই ভারতীয় ধরনে সংক্রমিত।
মার্চে দেশে করোনায় আক্রান্তদের ৮২ শতাংশের দেহে ভারতীয় ধরন শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল আইইডিসিআর। এ সময় আলফা ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায় ১৭ শতাংশ মানুষের দেহে। এপ্রিল মাসেও দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাড়তে থাকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। মে মাসে করোনায় আক্রান্তদের ৪৫ শতাংশের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়ে। জুনে ধরা পড়ে ৭৮ শতাংশের দেহে।