বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ কেন কমে যায়, তার কারণ ব্যাখ্যা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এ ব্যাখ্যা দেন।
হঠাৎ কেন অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকট বেড়ে গেল, এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল বলেন, ‘অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো যখন যেখানে ব্যবহার হয়, সেটি শেষ হয়ে গেলে রিফিল (পুনরায় ভরা) করার জন্য পাঠানো হয়। কাজেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা অনেক সময় বেড়ে যায়। আবার অনেক সময় কমে যায়। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাস্তবিক অর্থে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে।’
করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিশেষায়িত সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে বুধবার আইসিইউতে থাকা চার রোগীর মৃত্যু হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অক্সিজেনের অভাবে সাত রোগী মারা গেছেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চার রোগীর মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, অক্সিজেন সংকটে নয়; যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে সাতজনের মৃত্যুর খবর আসার পর জেলা প্রশাসন দাবি করেছে, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলার অভাবে রোগীদের চিকিৎসায় সাময়িক অসুবিধা হলেও সাধারণ মাত্রার অক্সিজেন সরবরাহে কোনো রকম বিঘ্ন ঘটেনি।
জেলা প্রশাসনের শুক্রবার রাতের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।
এমন বাস্তবতায় অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত দৈনিক অক্সিজেনের যে চাহিদা তার চেয়ে উৎপাদন অনেক বেশি আছে। রোগীর সংখ্যা বাড়লে অক্সিজেন সরবরাহ করা চ্যালেঞ্জ হবে।’
অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে নাজমুল বলেন, ‘অক্সিজেনের অভাবে কিছু জেলায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এই মৃত্যুর প্রাকৃতিক কারণ অনুসন্ধানের জন্য কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর অবশ্যই এ বিষয়ে আপনাদের সাথে কথা বলব। কিন্তু সার্বিকভাবে কোনো সংকট নেই।
‘যারা অক্সিজেন উৎপাদন করেন তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হচ্ছে সব সময়। প্রতিনিয়ত বৈঠক করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে কোনো সংকট নেই।’
টিকা কেন্দ্রে প্রবাসীদের ভিড় না করতে আহ্বান জানিয়ে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘নিবন্ধনের পর মোবাইলে এসএমএস পাবার পর প্রবাসী শ্রমিকদের নির্ধারিত টিকা কেন্দ্রে নিতে হবে। এ ছাড়া কাউকেই টিকা দেয়া হবে না।’
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা সপ্তাহে তিন দিন অনুমোদিত স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই নির্দেশনার আগে প্রতিদিন স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে আসতেন।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা অনুমোদিত স্থলবন্দর দিয়ে সপ্তাহে তিন দিন দেশে প্রবেশ করতে পারবেন। ছয়টি স্থলবন্দর (বেনাপোল, আখাউড়া, বুড়িমাড়ী, হিলি, দর্শনা, সোনামসজিদ) দিয়ে প্রবেশ করা যাবে।
তিনি বলেন, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতিবার দেশে আসা যাবে। এ নির্দেশনা বহাল থাকবে ১৪ জুলাই পর্যন্ত।