করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিধিনিষেধের মধ্যে দরিদ্রদের জন্য বিনা মূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে সরকার। এতে পরীক্ষায় আগ্রহ বাড়বে বলে আশা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে এই সুবিধা কেবল জুলাই মাসের জন্য দেয়া হয়েছে।
শাটডাউন নামে পরিচিতি বিধিনিষেধ চলার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে এক আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তবে দরিদ্র কারা এই বিষয়ে আদেশে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
গত বছরের মার্চে দেশে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শুরুতে সরকার বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষা করা হলেও পরে ১০০ টাকা করে ফি আরোপ করে। এটিও দরিদ্রদের পরীক্ষা না করার একটি কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই আদেশ এল এমন এক দিনে, যেদিন আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৪৩ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে অধিদপ্তর। এর আগে কখনও এত বেশি মানুষের মৃত্যু হয়নি এক দিনে।
এই দিন সকাল থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে শাটডাউন। জরুরি সেবা ছাড়া বাকি সব অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে আসলে সাজা দেয়া হচ্ছে। কেবল রাজধানীতে শাটডাউন দেখতে বাসার বাইরে এসে ধরা পড়েছেন ৪৯৭ জন। এর বাইরে জরিমানা করা হয়েছে বহুজনকে।
এই সময়ে বাইরে গণপরিবহন বলতে কেবল রিকশা চালু আছে। যদি যাত্রী কম থাকায় তাদের আয়ও ভালো না। পরিবহন খাতের অন্য শ্রমিকদের অবস্থা আরও খারাপ। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় তারা। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ায় আরও বহু খাতের কোটি কোটি মানুষ আছে দুশ্চিন্তায়।
এই পরিস্থিতিতে করোনা পরীক্ষার ফি যেন অতিরিক্ত চাপ হয়ে ধরা না দেয়, সে জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়েছে, ‘সারাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কোভিড-১৯ টেস্টের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কিন্তু টেস্ট ফি দিয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একই পরিবারের একাধিক সদস্যের করোনা পরীক্ষা করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। তাই করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় দেশের দরিদ্র জনগণের করোনা পরীক্ষা জুলাই মাসে বিনামূল্যে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’
দেশের সকল সরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে দেশের ৫৬৫ ল্যাবে ৩২ হাজার ৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে বেসরকারি পর্যায়ে ফি কমপক্ষে আড়াই হাজার টাকা।