বিদেশগামী কর্মীদের করোনার টিকাদান প্রক্রিয়া আগামী সপ্তাহে শুরু হবে। এ ক্ষেত্রে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা এক মাসের মধ্যে সুরাহা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
বৃহস্পতিবার ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে সৌদি আরবে হোটেল কোয়ারেন্টিন খরচ বাবদ বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেয়ার অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান মন্ত্রী।
তার এ বক্তব্যের আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সামনে বিদেশ গমনেচ্ছুরা ভিড় শুরু করেন। তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখনও টিকা পাওয়ার বিষয়ে কোনো আশ্বাস না পেয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা।
প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। আমরা কাজ করছি। সিস্টেম তো একটু লম্বা।
‘সবকিছু করতে গেলে একটু সময় তো লেগে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে টিকার সমাধান হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘সৌদি (কর্তৃপক্ষ) চায়নিজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে রাজি না। আমরা কিন্তু এরই মধ্যে এটা নিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি এটা নিয়ে সৌদিতে আমাদের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেছি; গতকালও কথা বলেছি।
‘আমরা চেষ্টা করছি সৌদি যেন চাইনিজ ভ্যাকসিনটা গ্রহণ করেন। এটা তো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনপ্রাপ্ত।’
ইমরান আহমদ বলেন, ‘প্রবাসগামীদের যে সমস্যা এটার সমাধান দিতে পারে এক টিকা। সেটা হলো জনসন অ্যান্ড জনসন। এটার এক ডোজ নিলেই চলবে। এটার জন্য আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলেছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যদি জনসন অ্যান্ড জনসনটা আনা যায়।
‘আমরা এটাও বলেছি, প্রয়োজনে খরচ যদি আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে দিতে হয়, আমরা সেটা দিতে রাজি আছি। যেহেতু এটা আমাদের প্রবাসীদের কল্যাণে, তাই আমরা সবকিছু করতে রাজি আছি।’
‘সৌদি আরব ও কুয়েত বলেছে, ফাইজারের একটা ডোজ নিয়ে গেলে তারা ওখানে বাকি একটা ডোজ দিয়ে দিবে বা অ্যাস্ট্রাজেনেকার নিয়ে গেলেও হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নিচে অনেক মানুষ ভ্যাকসিনের জন্য ভিড় করেছে। আমি নিজে দেখে আসলাম; তাদের সঙ্গে কথা বলে আসলাম। তারা অনেকেই নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের অনেক প্রান্ত থেকে কষ্ট করে এসেছেন।
‘তাদের তো এখানে আসার কথা ছিল না। কিন্তু এটা দায়িত্বহীনতা বলেন আর যাই বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন একটি সার্কুলার দিয়ে দিয়েছেন যে, ভ্যাকসিনের জন্য মন্ত্রণালয় যেতে। মন্ত্রণালয় কিন্তু এই ধরনের কোনো সার্কুলার দেয়নি।’
সিভিল সার্জনের বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘উনি সেটা কীভাবে দেন? আর এটার ভিত্তিতে সব দিকে ছড়িয়ে গেছে টিকার জন্য মন্ত্রণালয় আসতে হবে। এটা আশ্চর্যজনক ব্যাপার।
‘আমি জানি না ওইখানে সিভিল সার্জন সাহেব কীভাবে থাকেন। গতকাল ইস্যু করা হয়েছে। আজকে সেটা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত ছিল।’
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামনে টিকার জন্য জড়ো হওয়াদের সিভিল সার্জনরা ভুল পথে পরিচালিত করায় উষ্মা প্রকাশ করেন ইমরান আহমদ।
তিনি বলেন, ‘টিকার বিষয়ে প্রবাসীদের ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে। উনারা যে হাজার হাজার মানুষকে লকডাউনের মধ্যে কষ্ট করে হাজির করেছেন, এটার দায়িত্ব উনাদের নিতে হবে। আমার মনে হয় সিভিল সার্জনদের মধ্যে যারা এ কাজ করেছেন তাদের এটার দায়িত্ব নেয়া উচিত।’
অনুষ্ঠানে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে সৌদি প্রবাসীদের হোটেল কোয়ারেন্টিন খরচ বাবদ ২০ জনকে ২৫ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।