বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার বাকি টিকাগুলোর কী হবে

  •    
  • ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:১০

দুটি টিকার ডামাডোলে মধ্যে যেন হারিয়ে যেতে বসেছে পাইপলাইনে থাকা বাকি টিকাগুলোর খবর। আরও অনেক টিকা বাজারে আসার দ্বারপ্রান্তে। সেগুলোর কি প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে?

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এরই মধ্যে তিনটি টিকা কিনতে হুড়োহুড়ি করছে বেশির ভাগ দেশ। বাজারে এখন মোট চারটি টিকা। কিন্তু যেসব টিকা এখনও আসেনি বা এখনও গবেষণার মধ্যে আছে, সেগুলোর ভাগ্যে কী হবে? বেশ কিছু টিকার গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে। টিকার দৌড়ে এসব টিকা কি হেরে গেছে?

ফাইজার ও বায়ো-এনটেক উদ্ভাবিত টিকার দিকেই সবচেয়ে বেশি ঝোঁক সবার। এরপরই উচ্চারিত হচ্ছে মডার্নার টিকা। অক্সফোর্ডের টিকা শুরুতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও এখন কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে।আরও পড়ুন: ফাইজার, নাকি মডার্না: কোন টিকা ভালো?

গত বছরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই এই ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা উদ্ভাবনে উঠেপড়ে লাগে দেশগুলো। সাফল্য আসতে দেরি হয়নি।

সবার আগে আগস্টে করোনা প্রতিরোধী টিকা উদ্ভাবনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। কিন্তু ‘স্পুতনিক ভি’ নামের টিকাটি নজর কাড়তে পারেনি।

এই টিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে পশ্চিমা বিশ্ব। তাদের দাবি পর্যাপ্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই ছাড়া হয়েছে টিকাটি। একই অবস্থা চীন উদ্ভাবিত সিনোভ্যাক টিকার ক্ষেত্রেও।

করোনার টিকা ইস্যুটি গরম হয়ে ওঠে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুটি প্রতিষ্ঠান করোনারোধে কার্যকর দুটি টিকার ঘোষণা দেয়।

এর মধ্যে প্রথম টিকাটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফাইজার ও জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বায়ো-এনটেকের যৌথ প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত। অপরটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান মডার্নার একক প্রচেষ্টায় উদ্ভাবিত।

টিকা দুটির ডামাডোলের মধ্যে যেন হারিয়ে যেতে বসেছে পাইপলাইনে থাকা বাকি টিকাগুলোর খবর।

যুক্তরাষ্ট্রের টিকা প্রয়োগের পর্যায়ে আসতেও দেরি হয়নি। শুরুটা করে যুক্তরাজ্য। জনগণের মাঝে সবার আগে ফাইজারের টিকা প্রয়োগ শুরু করে ইউরোপের দেশটি। একই টিকা প্রয়োগ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, মেক্সিকো, চিলি, সৌদি আরব, কুয়েতসহ অনেক দেশ। মডার্নার টিকা নিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনেকে।

আর্জেন্টিনা নিয়েছে কেবল রাশিয়ার স্পুতনিক ভি টিকা। আর যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের টিকার পাশাপাশি চীন উদ্ভাবিত সিনোভ্যাক নিচ্ছে তুরস্ক।

তাহলে অন্যান্য টিকার চাহিদা কী শেষ হয়ে গেল?আরও পড়ুন: করোনার টিকা নিলেন যুবরাজ সালমান

না, শেষ হয়ে যায়নি। বাকি টিকাগুলোও বাজারে আসার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে সব ধরনের টিকাই প্রয়োজন হবে। কারণ একেক টিকার কার্যকারিতা একেক রকম।

বাকি টিকাগুলোর মধ্যে ব্যবহার পর্যায়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা। এটি করোনা ঠেকাতে ৯০ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এবার বিভিন্ন দেশে প্রয়োগের জন্য অনুমোদনের অপেক্ষায়।

এই টিকা পেতে অপেক্ষায় আছে অনেক দেশ। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশও। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অক্সফোর্ডের টিকার তিন কোটি ডোজ আনতে চুক্তি করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা। নতুন বছরের শুরুতেই ব্যবহারের পর্যায়ে পাওয়া যেতে পারে এই টিকা।

বাজারে টিকা ছাড়ায় জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদনকারী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসন। এ জন্য ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরিধি কমিয়ে আনা হয়েছে।আরও পড়ুন: সরকারের চিন্তায় মডার্না ও ফাইজার নেই

ট্রায়ালের চূড়ান্ত তথা তৃতীয় ধাপে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর টিকাটির পরীক্ষা চালানোর কথা ছিল। সেটা কমিয়ে আনা হয়েছে ৪০ হাজারে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি দিকে টিকাটি ব্যবহারে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হতে পারে।

কার্যকর টিকা ছাড়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ উৎপাদনকারী আরেক প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্স। যুক্তরাজ্যে এ টিকার শেষ ধাপের একটি ট্রায়াল হয়েছে। এই ট্রায়ালের তথ্য-উপাত্ত হাতে চলে আসতে পারে নতুন বছরের শুরুর দিকে। এ ছাড়া চলতি মাসেই বড় পরিসরের ট্রায়ালে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

চীনের রাষ্ট্রীয় ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম তাদের টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শেষ করেছে। নিজেদের দেশে ট্রায়ালের পর টিকাটি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনও। মধ্য প্রাচ্যের দেশ দুটি জানিয়েছে, টিকাটি কোরোনা রোধে কার্যকর ৮৬ শতাংশ।

এই টিকা সীমিত পরিসরে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে চীনে। যদিও সিনোফার্ম তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালের ফল এখনও ঘোষণা করেনি।

ভারতেও একাধিক টিকার ট্রায়াল চলছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের ছয়টি টিকা বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রায়ালে আছে। এর মধ্যে দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন নামক টিকা।

নভেম্বরে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চালু হয়েছে কোভ্যাক্সিনের। জরুরি প্রয়োজনে টিকাটি ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ায় আবেদন করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্সিনের কোনো ট্রায়ালের ফল প্রকাশ করা হয়নি। তবে ভারত বায়োটেক থেকে দাবি করা হচ্ছে টিকাটি করোনা রোধে ৬০ শতাংশ কার্যকর।

করোনাভাইরাসের সহজলভ্য টিকা উদ্ভাবনের চেষ্টায় আছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনোভায়ো ফার্মাসিউটিক্যালস। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান আরএনএ জিনকাঠামোর টিকা উদ্ভাবন করলেও তারা করছে ডিএনএ জিনকাঠামোর টিকা। এই টিকা সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে এক বছরের বেশি সময়। কিন্তু টিকাটি মাত্র ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে আছে।আরও পড়ুন: অ্যালার্জি থাকলে ফাইজারের টিকায় মানা

করোনার টিকার ট্রায়ালে দুঃসংবাদেরও ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আছে ফ্রান্সের সানোফি ও ব্রিটেনের গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন। চলতি মাসের শুরুর দিকে তারা জানায়, টিকা উৎপাদনে একাধিকবার ট্রায়াল চালিয়েও সাফল্য আসেনি। ট্রায়ালে দেখা যায়, তাদের টিকা পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সাধারণত কোনো টিকার অন্তত ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতা দেখতে চায়। আর যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান এফডিএ এই মাত্রা ঠিক করেছে ৫০ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর