ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে চলমান বিক্ষোভে এবার যোগ দিয়েছে দেশটির স্কুলছাত্রীরা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির যাচাই করা ভিডিও-তে দেখা যায়, ইউনিফর্ম পরা ছাত্রীরা মাথার স্কার্ফ বাতাসে নেড়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে।
হিজাব ইস্যুতে গ্রেপ্তার কুর্দি নারী মাহসা আমিনি ১৬ সেপ্টেম্বর মারা গেলে, বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ইরানের জনগণ। পুলিশ মাহসাকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করলেও, পরিবারের অভিযোগ গ্রেপ্তারের পর তাকে পেটানো হয়।
মাহসার মৃত্যুর পর রাস্তায় বিক্ষোভের পাশাপাশি ফেসবুক টুইটারে #mahsaamini এবং #Mahsa_Amini হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে চলছে প্রতিবাদ। নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের মধ্যেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে গোটা ইরানে।
কারাজ শহরে সোমবার হিজাববিহীন ছাত্রীদের কর্তৃপক্ষ ভেবে এক ব্যক্তিকে স্কুল থেকে বের করে দিতে দেখা গেছে। টুইটারে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও-তে দেখা যায়, ‘আপনার লজ্জা থাকা উচিত’-স্লোগানে এক ব্যক্তির দিকে তেড়ে যাচ্ছে ছাত্রীরা। এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তির দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারে তারা। বাধ্য হয়ে তিনি তখন স্কুলের গেট দিয়ে বের হয়ে যান।
Protesting students, chasing away an #Iranian official from their school, shouting: Shame on you…October 3rd… #MahsaAmini pic.twitter.com/eFmRhvaN2H
— Rana Rahimpour (@ranarahimpour) October 3, 2022কারাজ শহরের ভাইরাল আরেকটি ভিডিও-তে ছাত্রীদের চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা যদি এক না হই, তবে তারা একে একে আমাদের হত্যা করবে।’
স্কুল ছাত্রীদের বিক্ষোভ হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর শিরাজেও। কয়েক ডজন ছাত্রী একটি প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় তারা মাথার স্কার্ফ বাতাসে নেড়ে ‘স্বৈরশাসকের মৃত্যু’ বলে স্লোগান দেয়।
Iranian schoolgirls remove their head coverings and chant "mullahs must go away" today, on day 18 of protests over the death of #MahsaAmini in morality police custody for "improper hijab" amid mass arrests of activists and an internet shutdown.#مهسا_امینیpic.twitter.com/a01ILrgOlS
— Shayan Sardarizadeh (@Shayan86) October 3, 2022রাজধানী তেহরান, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সাকেজ এবং সানন্দাজে স্কুলছাত্রীদের বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
শ্রেণীকক্ষে মাথার স্কার্ফ খুলে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন ছাত্রীর ছবিও ঘুরপাক খাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির প্রতিকৃতির সামনে কেউ কেউ তাদের মধ্যমা আঙ্গুল দেখায়।
The first reaction from Iran's supreme leader about protests over the death of #MahsaAmini was loaded with warnings of escalation, yet the protests themselves spread to secondary schools today with some schoolgirls making a point about how they felt towards the supreme leader. pic.twitter.com/ya2MPr15b4
— Siavash Ardalan (@BBCArdalan) October 4, 2022ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি সোমবার প্রথমবার বিক্ষোভ নিয়ে কথা বলেছিলেন। তিনি জানান, ইরানের চিরশত্রু আমেরিকা এবং ইসরায়েল এই ‘দাঙ্গার’ মদদ দিচ্ছে। এর কয়েক ঘণ্টা পর বিক্ষোভ শুরু করে স্কুলছাত্রীরা।
খামেনি নিরাপত্তা বাহিনীকেও তার পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন; যারা প্রতিবাদের জবাবে হিংসাত্মক দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার হিসাবে, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত অন্তত ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।