আইনি কাঠামোর মধ্যেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে করা মামলার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার।
পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বরিশালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আমরা বৈঠকে বসেছিলাম। আলোচনা হলেও মামলা প্রত্যাহার সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আইনি কাঠামোর মধ্যে মামলার সমাধান হবে।
‘সমাজে নানা ধরনের ঘটনা ঘটে। সেগুলোর সামাজিক, আইনি বা অন্য যে সমস্ত সুষ্ঠু সমাধানের পথ আছে সেখান থেকে সব সমাধানই খুঁজে পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা আলোচনা করেছিলাম তারা সবাই একমত হয়েছি যে আমরা সবাই বরিশালের ভালো চাই। বরিশালে সুন্দর আইনশৃঙ্খলা, উন্নয়ন চাই। সামনের দিনগুলোতে যেন আইনশৃঙ্খলা সমুন্নত রাখতে পারি, পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখতে পারি সেরকমই একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
‘আমরা যারা রাষ্ট্রের সরকারি কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি এবং সামাজিক-রাজনৈতিক নেতা সবাই মিলে একসঙ্গে সুন্দরভাবে কাজ করব। এক লক্ষ্যে কাজ করব সেই সিদ্ধান্তই নেয়া হয়েছে।’
বরিশালের পরিস্থিতির সমাধান নিয়ে সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর সঙ্গে বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল রোববার রাতে বৈঠকে বসেন।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্যানেল মেয়র, পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসকসহ আরও অনেকে।
বৈঠক শেষে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ভুল-বোঝাবুঝি থেকে ওই ঘটনা হয়েছে বলে বৈঠকে আলোচকরা তুলে ধরেন। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কথাও উঠে এসেছে।’
এর আগে বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শোক দিবসের ব্যানার খোলাকে কেন্দ্র করে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা হয়। এ সময় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর আনসার সদস্যদের গুলি ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষ হয় পুলিশের সঙ্গেও।
এতে মেয়র ও প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনসহ ৩০ জন আহত হন, যদিও আওয়ামী লীগের দাবি, আহতের সংখ্যা ৭০।
এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও ইউএনও মুনিবুর রহমানের করা দুই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে।
মামলার মোট আসামি ৬০২ জন, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্যানেল মেয়র ও সিটি করপোরেশনের রাজস্ব কর্মকর্তাও ইউএনওকে আসামি করে দুটি মামলার আবেদন করেন। আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করে তা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।