ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃতীয় দফায় রিমান্ডে আবেদন করেছে সিআইডি।
বনানী থানায় করা পরীমনির নামে মাদক মামলায় বুধবার জামিন শুনানির কথা থাকলেও তা হয়নি সিআইডির রিমান্ড আবেদন করায়।
পুলিশের কাছ থেকে তদন্তভার পাওয়ার পর সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তফা পরীমনিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন উল্লেখ করে ফের পাঁচ দিনের হেফাজতে চেয়ে আবেদনটি করেন।
রিমান্ড আবেদনে কাজী গোলাম মোস্তাফা আদালতকে বলেন, ‘আসামিকে আগে রিমান্ডে নিয়ে তার কাছ থেকে যেসব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে তা যাচাই করা হচ্ছে।
‘সেসব তথ্য যাচাইসহ মজুত মাদক, মাদকের জোগানদাতা ও কারবারির হোতাদের সম্পর্কে পরীমনির পরিচয় জানতে আরও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। তাকে রিমান্ডে পাওয়া গেলে মাদক ব্যবসায়ী মূল হোতাদের গ্রেপ্তার, মাদকদ্রব্যের অবৈধ উৎসসহ অপরাধীদের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে।’
তিনি আদালতকে বলেন, ‘পরীমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অন্তরালে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন বলে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাই মামলার তদন্তের স্বার্থেই পরীমনিকে আরও পাঁচ দিন জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি।’
এ সময় রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করেন পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান। তিনি তৃতীয় দফায় তার মক্কেলের রিমান্ডের আবেদনকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে প্রহসন বলে আদালতকে জানান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীমনি একজন নারী এবং প্রথম শ্রেণির চলচ্চিত্র নায়িকা। তাকে রিমান্ডের নামে এভাবে হয়রানি করা উচিত নয়। আমরা আগামীকাল রিমান্ড বাতিলসহ তার জামিন শুনানি করব। আশা করি আদালত সেসব বিবেচনা করবে।’
পরীমনির অন্যতম আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী বলেন, ‘এই মামলায় তৃতীয় দফা রিমান্ড আবেদন কী করে করতে পারেন?
‘যেখানে এ মামলায় দুই দফা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, একজন স্বনামধন্য নায়িকাকে এভাবে যাতে হ্যারাসমেন্ট করা না হয় আমরা কাল আদালতের সামনে বিষয়টি তুলে ধরব। আশা করি আদালত বিষয়টি আমলে নেবে।’
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) রেজাউল করিম চৌধুরীর আদালতে পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন আবেদন করেন। আদালত বৃহস্পতিবার জামিন শুনানির তারিখ দেয়।
অবশ্য রিমান্ড আবেদন হলেও আদালত কোনো আদেশ দেয়নি।
সেই সঙ্গে জামিন শুনানিও পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের হাকিম দেবব্রত বিশ্বাসের আদালতে পরীমনির জামিন বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বুধবার রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, ‘পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন আছে, আসামির উপস্থিতিতে রিমান্ড আবেদনের শুনানির পর তার জামিন আবেদন শুনানি করতে পারবেন আসামিপক্ষ।’
জামিন শুনানিতে অংশ নিতে বুধবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান, নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী ও আরও কয়েকজন আইনজীবী।
চলতি ৪ আগস্ট বিকেলে বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। পরীমনির বাসা থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, মদের বোতলসহ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।
পরের দিন বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। সেদিনই তাকে চার দিন এবং ১০ আগস্ট পরীমনির দুই দিনের রিমান্ড দেয় আদালত।
১৩ আগস্ট রিমান্ড শেষে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে পাঠানো হয়।