কিছু দিন আগেই দেশের ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সাড়া ফেলেছিল খর্বাকৃতির গরু রানি। গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে স্বীকৃতি পেতে সাভারের রানি এখন অপেক্ষায় আছে।
প্রতিদিন শ শ মানুষ গরুটি দেখতে ভিড় জমায় ওই খামারে। রানির সঙ্গে ছবি তুলে ফ্রেমবন্দি করতে রীতিমতো চলেছে প্রতিযোগিতা। ছোট গরুর রেকর্ড গড়তে যাওয়া সেই রানির এখন অলস সময় কাটছে।
খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের যোগাযোগ হচ্ছে। চাহিদামতো তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা হয়েছে। গিনেস বুকে রানির স্বীকৃতি পেতে এখন সর্বোচ্চ দেড় মাসের অপেক্ষা।
রানির খোঁজ নিতে আশুলিয়ার কুরগাঁও শিকড় এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে যায় নিউজবাংলা। স্টাফদের অসুস্থতাজনিত কারণে সেখানে প্রবেশ একেবারেই বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে নিউজবাংলাকে তারা ছবি ও তথ্য সরবরাহ করেছে কর্তৃপক্ষ।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বুকে নাম লেখানোর দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে সাভারের রানি। ছবি: নিউজবাংলাশিকড় এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. আবু সুফিয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গিনেস বুক ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আমরা অ্যাপ্লিকেশন পাঠিয়েছি। ওরা তিন সপ্তাহের মধ্যে এভিডেন্স চেয়ে রিপ্লাই দিয়েছিল। ওদের একটা প্রেসক্রাইব ফরম্যাট আছে।
‘ফরম্যাটে বলা হয়েছে, এখানে যতগুলো লোকাল মিডিয়ায় নিউজ কাভার হইছে সেগুলোর লিংক চাওয়া হয়েছে। তারপর লোকাল যে ডাক্তার তার একটা ইন্টারভিউ; ওই ডাক্তার যে সত্যিই ডাক্তার এটার সার্টিফিকেট ও উইটনেসসহ কিছু সাক্ষী চেয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেগুলো আমরা পাঠানোর পর তারা একসেপ্ট করে বলেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ আমাদের ব্যাপারে চূড়ান্তটা জানাবে। এটা সর্বোচ্চ দেড় মাস।’
‘গিনেস বুকে অন্তর্ভুক্ত হতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেছে।’
কেমন আছে রানি?
আবু সুফিয়ান বলেন, ‘রানিকে নিয়ে দেশের সব মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারের পর বিশ্ব মিডিয়াতেও এসেছে। রানি বলতে গেলে সেলিব্রেটি হয়ে গেছে। গতকালকেও ডাক্তার ভিজিট করেছেন।
‘ডাক্তারের ভাষ্য অনুযায়ী, রানি সুস্থ আছে। তবে বেশির ভাগ সময় রানিকে এখন ভিতরেই রাখা হয়। ডিপ্লোমেটিক কারণে আমরা তাকে সেভাবে ছেড়ে দিই না। এতে সেলিব্রেটি রানির কিছুটা মন খারাপ থাকে আমরা বুঝতে পারি।’
খামারে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকারের বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল। যখন থেকেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, তখন থেকেই আমরা দর্শনার্থী প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছি। কেবল সাংবাদিকরা অ্যাপয়েনমেন্ট নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ভিজিট করতে পারবেন।’
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এই খামারে ২০ ইঞ্চি উচ্চতার খর্বাকৃতির গরু রানির সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার হয়। তখন খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, ভুট্টি জাতের এই গরুর দৈর্ঘ্য ২৬ ইঞ্চি এবং ওজন ২৬ কেজি। ১১ মাস আগে নওগাঁর প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রানিকে আনা হয় এই খামারে।
গিনেস বুকে খর্বাকৃতির গরু হিসেবে বর্তমানে যে গরুটি আছে সেটির উচ্চতা ২৪.৭ ইঞ্চি। ২০১৪ সালের ২১ জুন খর্বাকৃতির গরু হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া ভারতের কেরালা রাজ্যে মানিকিয়াম জাতের গরুটির ওজন ৪০ কেজি।