মাদক মামলায় কারাগারে থাকা পরীমনি ভালো আছেন বলে জানিয়েছে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে বলা হয়েছে, সাধারণ কয়েদিদের যেসব খাবার-দাবার এবং সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়, এই অভিনেত্রীকেও তাই দেয়া হচ্ছে।
দুই দফায় রিমান্ড শেষে গত শুক্রবার পরীমনিকে কারাগারে পাঠায় আদালত। নিয়মানুযায়ী, কারাগারে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিন সেলে রাখা হয়েছে তাকে।
আদালত পরীমনিকে ডিভিশন দেয়ার আদেশ দিলেও এ বিষয়ে কাগজপত্র এখনও কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছায়নি। তাই পরীমনিকে সাধারণ বন্দিদের সেবাই দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর সিনিয়র জেল সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব-মহিলা কারাগার) মো. আব্দুল জলিল।
রোববার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরীমনিকে কারাগারের কোয়ারেন্টিন সেন্টার রজনীগন্ধা ভবনে রাখা হয়েছে। তাকে ডিভিশন দেয়ার আদেশ এখনও আমরা পাইনি। ১৪ দিন পর তাকে আমরা সাধারণ বন্দিদের সেলে দিয়ে দেব।’
পরীমনির খাবারের তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘তিনি এখনও কোনো ডিভিশন পাননি, সাধারণ বন্দি হিসেবেই আমাদের এখানে এসেছেন। তাই সাধারণ বন্দিদের মেন্যু ফলো করা হচ্ছে।’
সিনিয়র এই জেল সুপার জানান, সাধারণ বন্দিদের জন্য সকালের খাবার হিসেবে দেয়া হয় রুটি বা পাউরুটি, চিনি বা গুড়, ডাল, দুধ, ডিম, জেলি বা মাখন, কলা ও চা।
দুপুরের খাবার হিসেবে দেয়া হয় ভাত কিংবা রুটি, মাছ বা মাংস, শাকসবজি ও ডাল এবং রাতের খাবার হিসেবে দেয়া ভাত বা রুটি, মাছ বা মাংস, শাকসবজি ও ডাল।
পরীমনি কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস চাচ্ছেন কি না জানতে চাইলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘তিনি কারাবিধি অনুযায়ী যা যা পাবার কথা সব সুবিধাই পাচ্ছেন। এর বাইরে যাবার কোনো সুযোগ নেই। বিধির বাইরে কিছু চাইলেও পাবেন না।’
কারাগারে আসার পর পরীমনির সঙ্গে পরিবার ও স্বজনদের দেখা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে আব্দুল জলিল বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে আমাদের এখানে নতুন বন্দি এলে ১৪ দিন কারও সঙ্গে দেখা করার সুযোগ নেই। তাই এখন তার পরিবারের সদস্যরা হয়তো আসতে পারেন, কিন্তু দেখা করা যাবে না।’
আলোচিত এই অভিনেত্রীকে গত ৪ আগস্ট তার বনানীর বাসা থেকে মাদকদ্রব্যসহ আটক করে র্যাবের একটি দল। পরদিন বনানী থানায় পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করে বাহিনীটি।
এই মামলায় ৫ আগস্ট রাতে পরীমনিকে চার দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত। প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই নায়িকাকে ফের দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন বিচারক। দুই দফা রিমান্ড শেষে ১৩ আগস্ট থেকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পরীমনির মুক্তি চেয়ে অনেকে দাবি জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক ও কলাম লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার ‘জাস্টিস ফর পরীমনি’ দাবিতে একটি সমাবেশ হয়। ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’-এর ব্যানারে এই সমাবেশে যোগ দেন রাজনৈতিককর্মী, মানবাধিকারকর্মী, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা।