নোয়াখালী সদরের আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ মোল্লাকে গুলি করে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
হারুনুর রশিদ মোল্লার ভাই আমিনুল হক শনিবার বিকেলে সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১২ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ উদ্দিন বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের চৌকিদার হাট বাজার এলাকার সাদাবুড়ির মসজিদসংলগ্ন নার্সারির সামনে হারুন মোল্লাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
বিএনপির নেতা হারুনুর রশিদ মোল্লাকে হত্যার ঘটনায় শুক্রবার দুইজনকে আটক করা হয়
এ ঘটনায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিয়নের চৌকিদার হাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে পূর্ব মাইজচরা গ্রামের মো. সোহাগ ও মিলন হোসেনকে আটক করা হয়।
নিহত হারুনুর রশিদ মোল্লা ওই ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের নছিবুল হকের ছেলে এবং আন্ডারচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
হামলার ঘটনায় আহত হারুন মোল্লার ভাতিজা রমিজ উদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কএলজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত হামলাকারী গিয়াস উদ্দিন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
- আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাকে গুলি করে কুপিয়ে হত্যা
নিহত হারুন মোল্লার ভাতিজা জামাল উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হারুন মোল্লার ভাই আমিনুল হকের বাড়ির ওপর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করে সাহাব উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। বিষয়টি বুঝতে পেরে আমিনুল হক সাহাব উদ্দিনকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর চৌকিদার হাটের মসজিদে আমিনুল হক ও তার ভাতিজা সজিবের (হারুন মোল্লার ছেলের) সঙ্গে সাহাব উদ্দিন, রিয়াদ, রিপন, নাছির, ফরহাদ, রহমানসহ কয়েকজনের পুনরায় কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।
জামাল আরও জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভাতিজা রমিজ উদ্দিনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে চৌকিদার হাট বাজারে যাচ্ছিলেন হারুন মোল্লা। পথে চৌকিদার হাটের পশ্চিমে সাদাবুড়ির মসজিদের পাশে নার্সারির সামনে পৌঁছালে তাদের লক্ষ্য করে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় হারুন মোল্লা ও রমিজ মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যান। পরে হারুন মোল্লাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা হারুন মোল্লা, তার ভাতিজা রমিজ উদ্দিন এবং হামলার সময় আহত হামলাকারী গিয়াস উদ্দিনকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, হারুনুর রশিদ মোল্লাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন ও কোপের জখম ছিল।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) শহীদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
সুধারাম মডেল থানার ওসি শাহেদ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর।