মেরামতের এক দিন পর শরীয়তপুরের নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ১ নম্বর পন্টুনের র্যাম্প আবারও ভেঙে গেছে। তাতে গাড়ি আটকে যাওয়ায় ওই ঘাটে শনিবার আবারও ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
খুলনা থেকে চট্টগ্রামগামী জিএস ট্রাভেলসের একটি বাস শনিবার সকাল ৯টার দিকে ওই ঘাট দিয়ে ফেরিতে উঠার সময় পন্টুনের র্যাম্পে আটকে যায়। এতে দেখা দেয় তীব্র যানজট।
ঘাটটি স্বাভাবিক হতে আরও ৩-৪ ঘণ্টা লাগবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
ভোমরা বন্দর থেকে পেঁয়াজবোঝাই ট্রাক নিয়ে কুমিল্লার লাকসামে যাবেন তরিকুল ইসলাম বাবু। ১১ তারিখ থেকে এই ঘাটে পারের জন্য অপেক্ষা করছেন।
তিনি জানান, সময়মতো পেঁয়াজ নিয়ে যেতে না পারলে সব পেঁয়াজ পচে যাবে। একদিকে মালিকের অবস্থাও খারাপ অন্যদিকে তারও সব টাকা শেষ। এ অবস্থায় তিনি এখন ফেরি পারের অপেক্ষায়।
বরিশালের উজিরপুর থেকে ট্রাকবোঝাই পেয়ারা নিয়ে আসা সুমন সরদার বলেন, ‘সমেস্যা ওইলে ঐ জায়গায় ঘাটে ফেরি কম। ঘাটে আইসা তো নানা সমেস্যা দ্যাহা দেছে। কোন কাঁচামাল এগুলি তো আগের দেতেই হবে। হের পড়ো ও তিনদিন চারদিন ধরে বইয়া থাকতে থাইকা রইছি। ফেরি কম হেই লিগ্যা জাম বাজছে।’
নরসিংহপুর ফেরিঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ঘাট ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল সীমিত হওয়ায় প্রতিদিন এ ঘাটে চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক জুড়ে ৭০০ যানবাহন পারের অপেক্ষায়।
‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে ভোগান্তিতে আছে যাত্রী ও চালক। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে নতুন ফেরি দেয়ার কথা থাকলেও তিন দিন পেরিয়ে গেল, পাওয়া যায়নি নতুন কোনো ফেরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরোনো ছোট আকারের ৬টি ফেরি দিয়ে পারাপার করলেও একটি ফেরি বিকল থাকায় যানবাহন পারাপারে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।’
বার বার পন্টুনে কেন সমস্যা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এটি পুরনো পন্টুন। এর রেম ২০ ফুট। জোয়ারের পানি বাড়লেই ভেসে যায় তখন ফেরি কোনো পন্টুনে উঠতে পারে না। পানি নেমে গেলে তখন আবার র্যাম্প দিয়ে যানবাহন ফেরিতে উঠতে পারে।
‘সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের র্যাম্পযুক্ত নতুন পন্টুনের জন্য বিআইডব্লিউটিএইয়ের কাছে আমরা বারবার বলেছি। একটা পন্টুন দিয়েছিল যেটা হরিনা ফেরিঘাটে ব্যবহার করা হচ্ছে। শীঘ্রই নতুন পন্টুন দেয়া হবে তখন এ সমস্যা থাকবে না।’
এর আগে শুক্রবার সকালেও এ ঘাটে পন্টুনের র্যাম্পে গাড়ি আটকে যায়। বেলা ১২টার দিকে পন্টুন মেরামত করে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।