ফোনালাপে আড়ি পাতা বন্ধের নিশ্চয়তা ও ফাঁস হওয়া ঘটনাগুলোর তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী মঙ্গলবার এ রিট করেন।
রিটে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিবাদী করা হয়েছে।
১০ আইনজীবীর পক্ষে আদালতে রিটটি করেন মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি জানান, এর আগে গত ২২ জুন এ বিষয়ে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছিল। কোনো জবাব না পাওয়ায় রিট করা হয়েছে।
রিটকারীদের আইনজীবী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সংলাপ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ফোনালাপ, প্রয়াত সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার, ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীসহ ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সংঘটিত ২০টি আড়ি পাতার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে রিট আবেদনে।’
আড়ি পাতার ঘটনা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে বহুল প্রচারিত এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অথচ সর্বজনীন মানবাধিকার সনদপত্র, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী পৃথিবীর সব আধুনিক ব্যবস্থায় ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার স্বীকৃত ও সংরক্ষিত।
এমনকি বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা সংরক্ষণ নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ অধিকার সংবিধানের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে।
শিশির মনির বলেন, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ধারা ৩০(চ) অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষার দায়িত্ব এই কমিশনের। কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে যে, এ ধরনের ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনা অহরহ ঘটছে।
২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট বিচারপতি মো. শওকত হোসাইন, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মবিনের বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে একটি রায় দেয়।
ওই রায়ে বলা হয়, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও টেলিফোন সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব সর্বাধিক। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণ তাদের দায়িত্ব। তারা আইনের বিধান ব্যতিরেকে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য প্রদান করতে পারে না।
মঙ্গলবার রিটকারী ১০ আইনজীবী হলেন মুস্তাফিজুর রহমান, রেজওয়ানা ফেরদৌস, উত্তম কুমার বনিক, শাহ নাবিলা কাশফী, ফরহাদ আহমেদ সিদ্দীকী, মোহাম্মদ নওয়াব আলী, মোহাম্মদ ইবরাহিম খলিল, জি এম মুজাহিদুর রহমান (মুন্না), ইমরুল কায়েস ও একরামুল কবির।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।