রংপুরের বদরগঞ্জের পল্লি চিকিৎসক আতিকুর রহমান আশিককে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার রাতে বদরগঞ্জ আমলী আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কে এম হাফিজুর রহমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার সময় এ তথ্য দিয়েছেন হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ও আতিকুরের ফুফু আদরী বেগম।
সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি-ডিবি) আশরাফুল আলম।
শুক্রবার বদরগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের কিসামত বসন্তপুর গ্রামের পল্লি চিকিৎসক আশিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
- আরও পড়ুন: নিজ ঘর থেকে পল্লি চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার
শনিবার দুপুরে আশিকের বাবা ফজলুল হক, ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম, আশরাফুলের স্ত্রী হাসমত আরা ও আশিকের ফুফু আদুরী বেগমকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন আশিকের শ্বশুর আবদুল মতিন।
পুলিশ সেদিন বিকেলেই অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের আদালতে নেয়া হয়।
এএসপি আশরাফুল জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আশিকের ফুফু আদরী আদালতে জবানবন্দি দেন।
আদুরীর বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আশিক মাদকাসক্ত ছিলেন। এ কারণে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এ বিষয়ে অনেকবার সালিশ করেও কোনো সমাধান হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে আশিকের বাড়িতে ফের সালিশ হয়। এ সময় আশিক, তার বাবা, ফুফু, ছোট ভাই ও স্ত্রী, আশিকের শ্বশুর মতিনসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে আশিকের বাবা ফজলু বলেন, তারা আর কোনো সালিশ করতে পারবেন না।
সালিশে আশিকের ছোট ভাই আশরাফুল বলেন, পরদিনই আশিকের স্ত্রীর দেনা-পাওনা বুঝে দিয়ে তাকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হবে।
আশিকের ফুফু আদুরী আরও জানান, এ সময় আশিকের এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তার পরিবার। সে সময়ই আশরাফুল লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করেন। একসময় আশিক মাটিতে পড়ে যান।
আশিককে টেনে ঘরে নিয়ে যান তার বাবা, ছোট ভাই ও তার স্ত্রী। পরে আশিকের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
এএসপি আশরাফুল বলেন, আসামিদের শনিবার আদালতে নিলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।